স্বাস্হ্য
Hits: 823
বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞান দিন দিন উন্নতি করছে। প্রতিনিয়তই দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা করছে বেশ উন্নয়ন। আর সেই ধারাবাহিকতায় আবারো নতুন করে দেখা দিয়েছে একটি সফলতা।চিকিৎসা বিজ্ঞানে জীবাণু-প্রতিরোধী অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নিয়ে যখন ক্রমশই উদ্বেগ ও হতাশা বাড়ছে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী একেবারে নতুন ধরনের একটি অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেয়েছেন।
আরো পড়ুন
Error: No articles to display
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অ্যান্টিবায়োটিকের গঠন ও বৈশিষ্ট্য দেখে মনে হচ্ছে যে এটি শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবে বলে তারা আশা করছেন।
পাট থেকে এই অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করা হয়েছে যার নাম দেওয়া হয়েছে হোমিকরসিন। প্রাপ্ত ব্যাকটেরিয়া ও পাটের বৈজ্ঞানিক নাম মিলিয়ে এই অ্যান্টিবায়োটিকটির নামকরণ করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি নিউজ বাংলা
বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী নেচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে সম্প্রতি এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ল্যাবে তিন বছর ধরে গবেষণার পর এই অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষক ড. হাসিনা খানের নেতৃত্বে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পাট নিয়ে গবেষণা করছেন।
বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, পাটের জীবন রহস্য উদঘাটনের সময় তিনি এর ভেতরে বিভিন্ন ধরনের অণুজীবের সন্ধান পেয়েছিলেন। এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকেই তিনি বিভিন্ন অণুজীবের ওপর গবেষণা শুরু করেছিলেন। তার এক পর্যায়ে অনেকটা আকস্মিকভাবেই তিনি এই অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পান।
হাসিনা খান বলেন, "এটা অনেকটা অপ্রত্যাশিতই বলবো। পাট নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমি পাটের অণুজীবের সন্ধান পেলাম। তখন সেগুলোকে খুব ইন্টারেস্টিং বলে মনে হলো।"
"প্রত্যেক উদ্ভিদের সাথেই বসবাস করে কোটি কোটি অণুজীব। এরা উদ্ভিদের জন্য নানা ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করে। এছাড়াও আরো কিছু অণুজীব আছে যারা আমাদেরও কাজে আসে। তো আমরা এরকম এক অণুজীবের সন্ধান পেলাম যা অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে," বলেন তিনি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পাটের তন্তুর খাঁজে খাঁজে বহু অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়া বাস করে। এদের মধ্যে তারা একটি ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ পান যা তার নিজের শরীর থেকে এমন কিছু তৈরি করে, যাতে অন্য ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যায়।
যে অণুজীবের ভেতরে তারা অভিনব এই ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পান সেটি তারা পেয়েছেন পাটের বীজের ভেতরে। তারা দেখলেন স্টেফাইলোকক্বাস হোমিনিস নামের এই ব্যাকটেরিয়াটি একটি অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করছে।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, যাদের দেহে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না, অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে অণুজীবের প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে, তাদের চিকিৎসায় এই হোমিকরসিন অ্যান্টিবায়োটিক ভালোভাবেই কাজ করবে।
এ দিকে এমন একটি অর্জনে উচ্ছ্বাসিত সবাই। সকলেই এমন একটি উদ্ভাবনে হয়েছেন আনন্দিত। বিশেষ করে এর অনুপ্রেরণা জোগাবে সামনে থাকা তরুণদের এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।