ভারতের মধ্য প্রদেশের ঔষধি গুণসম্পন্ন মুরগি হিসেবে পরিচিত ’কাদাকনাথ’ এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি মুরগির তালিকায় স্থান পেয়েছে। কালো রঙের ওই জাতের মুরগি কাদাকনাথের খামার এখন রাজশাহীর বাগমারায়। উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের গোয়ালকান্দি গ্রামের গৃহবধূ শিরিনা নিজ বাড়িতে ওই মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন। এ কাজে শিরিনাকে সহযোগিতা করছেন তার স্বামী ও দুই ছেলে।
শিরিনা প্রায় আট-দশ বছর আগে থেকে পোল্ট্রি মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন। এতে লাভের মুখ যেমন দেখছেন লোকসানের পরিমাণও কম না। তার পোল্ট্রিতে এখনো লেয়ার ব্রয়লার, টাইগার, টার্কিসহ নানা জাতের মুরগি রয়েছে। মুরগি পালনে শিরিনার অভিজ্ঞতা কম নয়। নানা জাতের মুরগির খামার করেই তিনি সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। এদিকে প্রায় দুই বছর আগে তিনি খোঁজ পান কালো রঙের কাদাকনাথ মুরগির খামার এখন লাভজনক।

আরো পড়ুন

Error: No articles to display

খাদ্য তালিকায় এর মাংস সুস্বাদু, ঔষধি গুণসম্পন্ন ও দামি এবং এর ডিম ও বাচ্চা বিক্রি করেও অধিক লাভবান হওয়া যায়। এ কথা জানার পর তিনি নরসিংদী থেকে প্রতিটি ৮০০ টাকা করে ২২টি কাদাকনাথ মুরগির বাচ্চা কিনে আনেন। ওই মুরগির হাড়, মাংস, জিব, নখ পর্যন্ত কুচকুচে কালো।
নিজস্ব ইনকিউবেটরের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদন করেন তিনি। এই ২২টি মুরগির ডিম থেকে এখন শিরিনার খামারে রয়েছে ২৫০টি এক মাসের বাচ্চা। প্রতি সপ্তাহে ৮০ থেকে ১০০টি নতুন বাচ্চা যোগ হচ্ছে শিরিনার খামারে। গত দুই মাস থেকে তিনি বাচ্চা বিক্রি আরম্ভ করেছেন। তার খামারে নতুন প্রজাতির মুরগি দেখতে প্রতিদিনই উৎসুক নারী পুরুষের ভীড় লক্ষ করা যায়।
জানা যায়, এই জাতের মুরগির আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপ। সেখানে এটাকে বলা হয় ’আয়্যাম কেমানি’। ভারতের মধ্য প্রদেশে কাদাকনাথ ’কালোমাসি’ বা ’কড়কনাথ’ নামে পরিচিত। নারী উদ্যোক্তা শিরিনা জানান, এ জাতের মুরগির বৈশিষ্ট হলো- ২১ দিনে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদিত হয়।
এক মাস বয়সি বাচ্চার দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেড় মাস বাচ্চার দাম ১০০০ টাকা এবং দুই মাসের বাচ্চার দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।
তিনি আরও জানান, কাদাকনাথের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হলো এই জাতের মুরগির খাবার খরচ খুবই কম আর পুষ্টি উপাদান ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য সব মুরগির চেয়ে বহুগুনে বেশি। বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্পে বাগমারায় মন্দা অবস্থা বিরাজ করলেও শিরিনা আশা পোষণ করেন কাদাকনাথ পালনের মাধ্যমেই তিনি অধিক লাভবান হবেন।
এ শিল্পে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এর প্রসার আরো ব্যাপকভাবে বাড়াতে পারবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

News Page Below Ad

আরো পড়ুন

Error: No articles to display