সম্প্রতি এ বিএনপি’র বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে চলছিল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে উত্তেজনা। এরই মাঝে মির্জা ফখরুলের(Mirza Fakhrul) কংগ্রেসকে(Congress) দেওয়া চিঠি যেন আগুনে ঘী ঠেলে দেওয়ার মতো। তাইতো এবার কড়া হুঁশিয়ারি তথ্যমন্ত্রীর(Information Minister)। তিনি এটাও বলেছেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেইসাথে তুলে ধরেন বিএনপি’র বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কথা।
রাজনৈতিক দল(political party) হিসেবে বিএনপি(BNP) সরকারের(government) কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে পারে। কিন্তু দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করা, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ধ্বংস করা, দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে চিঠি দেওয়া, লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা দেশদ্রোহী(treasonous) ও দেশবিরোধী(anti-national)।
এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র(conspiracy)। মূলত বিএনপি ও তাদের নেতারা বিশ্বাসঘাতকতা করছে। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন শেষে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ড. হাসান মাহমুদ(Hassan Mahmud)।
তিনি বলেন, বিদেশে লবিস্ট(lobbyists) নিয়োগসহ দেশের বিরুদ্ধে বিএনপি যেসব ষড়যন্ত্র করছে তা তদন্ত করে বের করা হবে। অবৈধ টাকা কোথা থেকে গেল, কারা নিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও সেদিন সংসদে তার ভাষণে এসব কথা বলেছিলেন। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধনকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্য(Nitai Kumar Bhattacharya) এবং নবনিযুক্ত মহাব্যবস্থাপক মাহফুজা আক্তার(Mahfuza Akter)। হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণের আস্থা থাকলে বিএনপির বিদেশিদের চিঠি দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এদেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ, কারা ক্ষমতায় যাবে আর কারা ক্ষমতা ছাড়বে তা জনগণই ঠিক করবে। বিএনপি ও বিএনপি মহাসচিব দেশকে বদনাম করতে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ব্যাহত করতে, দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এটা দেশবিরোধী কাজ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর(Mirza Fakhrul Islam Alamgir) নিজে যেভাবে স্বাক্ষর করে মার্কিন কংগ্রেসের বিভিন্ন বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছেন তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বিভিন্ন সময়ে লবিস্ট নিয়োগ করেছে এবং লবিস্ট নিয়োগ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর চেষ্টা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর(Prime Minister) যোগ্য ছেলে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়কে(Sajib Wazed Joy) হত্যার জন্য তারা একজন এফবিআই এজেন্ট নিয়োগ করেছে। সেই এফবিআই এজেন্টকে এখন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, এভাবে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করতে কয়েক বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে নিজের নামে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। তারা যে লবিস্ট নিয়োগ করেছে তাদের নথিগুলি আমার আইপডে সংরক্ষিত আছে। নথিসহ প্রতিবেদনও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী তার আইপড থেকে উপস্থিত সাংবাদিকদের সনদপত্র দেখান। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে একবার সকালে, একবার বিকেলে এবং সন্ধ্যায় একবার কথা বলে। দিনে তিনবার তিনি সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, যা হাস্যকর। তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছি, যা অনেক উন্নয়নশীল দেশে হয় না। কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। একটি বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থার জন্য, একটি গণতান্ত্রিক সমাজকে সংহত করার জন্য তথ্যের একটি অবাধ প্রবাহ প্রয়োজন। এ জন্য বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এই বেসরকারি চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে খুব স্বাধীনভাবে কাজ করছে। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর অবস্থান চট্টগ্রামে হলেও স্থলজ যোগাযোগের মাধ্যমে দেশের সত্তরটি স্থানে দেখা যায়। এবং সারা দেশ এবং সারা বিশ্বের মানুষ এটি শুধুমাত্র সংযোগের মাধ্যমে অ্যাপের মাধ্যমে দেখতে পারে। শিক্ষা ও কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান বিটিভির অধীনে আরেকটি চ্যানেল চালু করা হবে। এছাড়া দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে নতুন নতুন বিটিভি কেন্দ্র চালুর প্রকল্পের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জন্য ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন(information minister), এ প্রকল্পের আওতায় নতুন স্টুডিও, অডিটোরিয়াম ও নতুন ভবন হবে। ফলে এ কেন্দ্র থেকে আরও মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান তৈরি ও সম্প্রচার করা সম্ভব হবে।
উক্ত বিষয় নিয়ে এখনো পর্যন্ত বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের মুখ থেকে কিছু শোনা যায়নি। দেখার বিষয়ে তদন্ত কমিটি কি বলে আর পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার দল বিএনপি’র বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয়, যদি এই খবর সত্য হয় তাহলে প্রশাসন বিভাগ বিএনপি দলের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেই। সাথে এটাও দেখার বিষয় পরবর্তীতে বিএনপির এই মন্তব্যের ভিত্তিতে কি কথা বলে।