রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বিআইসিসি হলে আহবাবুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র উদ্যোগে জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২১ এর গ্র্যান্ড ফিনাল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন হাছান মাহমুদ। বক্তব্য় প্রদান-কালে তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যে ”মাদার অব ডেমোক্রেসি” পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তাতে তারিখ ঠিক নেই এবং পুরস্কারদাতাদের ওয়েবসাইটেও তার (খালেদা জিয়া) নাম নেই।’
গণতন্ত্রের প্রতি অসামান্য অবদানের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ সম্মাননা দিয়েছে কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও)। এই সম্মাননা পাওয়ার সাড়ে তিন বছর পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি জানিয়েছে বিএনপি।
সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদে দেখা যায়, ‘ডেমোক্রেসি হিরো’ ক্যাটাগরিতে খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ পুরস্কার দেওয়া হয়। তাতে উল্লেখ আছে, বাংলাদেশে ও বহির্বিশ্বে অনগ্রসর জনগণের জন্য গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য খালেদা জিয়াকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। ক্রেস্টে তারিখ উল্লেখ রয়েছে, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই।
এত দিন পর কেন এই পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা জানানো হলো- জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল যুগান্তরকে ওই দিনই (৮ ফেব্রুয়ারি) বলেছিলেন, ‘এর কারণটা হচ্ছে- এই সম্মাননা যখন দেওয়া হয়, তখন ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) জেলে ছিলেন দুই বছর। তারপর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন কয়েকবার। এখন উনি বাসায় এসেছেন। আমরা তাকে সম্মাননার কথা জানিয়েছি। আপনাদেরকেও (গণমাধ্যম) জানালাম।’
সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে গতকাল ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার জন্মের তারিখ যেমন ঠিক নেই, পুরস্কারের তারিখও ঠিক নেই, পুরস্কারদাতাদের ওয়েবসাইটেও তার নাম নেই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ পাঁচটা, বিবাহ রেজিস্টারে একটা, পাসপোর্টে একটা, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্রেডেনশিয়ালসে একটা, ম্যাট্রিকুলেশনে যেটাতে তিনি ফেল করেছেন সেখানে একটা, আবার কোভিড সনদে একটা। আবার তিনি পুরস্কার পেয়েছেন ৩১ জুলাই ২০১৮, আর জানা গেল ২০২২ সালে। আর যে সংস্থা থেকে সেই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলা হচ্ছে, তাদের ওয়েবসাইটে আবার তার নাম নেই।’
‘এ ধরনের তেলেসমাতি দেখার পর জনগণ যখন তাদের নিয়ে হাসছে, তখন খালেদা জিয়ার সভাসদরা উদভ্রান্তের মতো কথা বলছেন’ উল্লেখ করেন ড. হাছান।
এ সময় ইসি নিয়ে সাংবাদিকরা বিএনপির একটি বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন হাছান মাহমুদের। বিএনপি বলছে, ইসি নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় বসানোরই ষড়যন্ত্র- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির উন্মেষটাই তো ষড়যন্ত্র, অস্ত্র আর মানুষের লাশের ওপর দিয়ে এবং তারা সবসময় ষড়যন্ত্রের মধ্যেই থাকেন বলে সবকিছুতেই ষড়যন্ত্র দেখতে পান।’
পৃথিবীর অনেক গণতান্ত্রিক দেশেও সার্চ কমিটির মাধ্যমে এত স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বরং অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন করা হয়েছে এবং সেই কমিটি কাজ শুরু করেছে। নির্বাচন কখনো সরকারের অধীনে হয় না, নির্বাচন কমিশনের অধীনে হয়। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের একজন কনস্টেবল বদলির ক্ষমতাও সরকারের হাতে থাকে না। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এগুলো ভালো করেই জানেন। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন বলেই এসব কথা বলছেন। তাদের না বলা বাতিক নিয়ে আমি শঙ্কিত।’
শায়েখ হাফেজ কারী আব্দুল হকের সভাপতিত্বে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী দোয়া পরিচালনা এবং আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান ও মাওলানা উবায়দুর রহমান অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় হাছান মাহমুদ জানান, ‘আলেম সমাজকে তাদের শিক্ষাপদ্ধতির স্বীকৃতি ও বিশ্ববিদ্য়ালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যারা তা ভঙ্গ করেছে তাদেরকে ”না” বলে যারা প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে তাদেরকে ”হ্য়াঁ” বলতে হবে।’