গত ১০ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার অনলাইনে অর্থনীতি ও সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির একটি সভা হয়। সভাশেষে দুপুরে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতে সারাবিশ্বের অবস্থা খারাপ ছিল। কিন্তু কখনো আমাদের অর্থনীতি নিম্নমুখী হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি সবসময় গতিশীল ছিল, প্রবৃদ্ধিও ভালো ছিল। সেজন্য সারাবিশ্বের কাছে আমরা সমাদৃত এবং প্রশংসিত হয়েছি। হিসাবটি সহজেই পাওয়া যাবে, আগে দেখতে হবে আমাদের এখানে মূল্যস্ফীতি হলো কিনা। সেটি হয়নি। আমাদের এক্সচেইঞ্জ রেট স্ট্যাবল ছিল।
যেখানে অন্যান্য দেশের অর্থনীতি কমে গেছে, সেখানে আমাদের অর্থনীতি যেভাবে উন্নতি হলো- এ বিষয়ে মতামত চাইলে মন্ত্রী জানান, যখন সারাবিশ্বে একদম খারাপ অবস্থা ছিল সেসময়ও আপনারা দেখেছেন আমরা বেশ ভালো ছিলাম। আমাদের অর্থনীতি কখনো নিম্নমুখী হয়নি। রেভিনিউ জেনারেশন যখন এই সময় দুরূহ ছিল, সেটিও আমাদের ১৫ শতাংশ বেশি ছিল। রপ্তানি বাণিজ্য ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় ও বিশেষভাবে প্রণোদনা ঘোষণায় আমাদের দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে গেছে ৩৬ শতাংশ। রেমিট্যান্সটা যদিও আমাদের জিওবিতে আসে না। কিন্তু মাথাপিছু আয়ে আসে। এগুলো হলো আমাদের অর্থনৈতিক এলাকা। এর কোথাও কিন্তু নেগেটিভ গ্রোথ নেই।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত বাজেট যখন সংসদে উপস্থাপন করেছিলাম, সেসময় আমি উল্লেখ করেছিলাম জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি বেশি হবে। সেটিই কিন্তু হয়েছে। আমি মনে করি এসব কিছু সম্ভব হয়েছে এদেশের মানুষের জন্য। আমরা পেয়েছিলাম একজন প্রধানমন্ত্রী, তার সুযোগ্য গতিশীল নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি এই দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য- তারা যেন হাতে টাকা পেতে পারে, সংসার চালাতে পারে সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেটি যথাযথভাবে কাজ করেছে। অন্য কেউ সাহস পায়নি এটি করার জন্য, আমরা সেটি করেছি। এসমস্ত কারণেই আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।’
এসময় তিনি জানান, যেভাবেই হিসাব করেন- আমরা যে হিসাব দিয়েছি আপনারা সেভাবেই পাবেন। কেউ কেউ বলবে আমাদের মূল্যায়ন ঠিক হয়নি, হয়তো আমরা বেশি দেখিয়েছি। আমাদের যে অর্জন সেটি তো আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন, কোথায় আছি আমরা? আমারা তো সব জায়গায় অর্জন দেখতে পাচ্ছি। এখন আপনারা যদি কোনো অর্জন না দেখেন তাহলে বলতে পারেন ঋণাত্মক ফিগার আছে।
গত অর্থবছরের জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের যে চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে দেখা গেছে ৯ মাসের তুলনায় দুইটি সেক্টরেরই অনেক বৃদ্ধি ঘটেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জিডিপিতে যে প্রবৃদ্ধি এবং আমাদের মাথাপিছু আয় এগুলো সবকিছু নির্ধারিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত সিস্টেম অব ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস ২০০৮ অনুসরণ করে। অন্যান্য দেশও সেটি অনুসরণ করে থাকে।’
সাংবাদিকদের সাথে আলোচনা কালে অর্থমন্ত্রী জানান – বেশিরভাগ দেশের মত বাংলাদেশেও একই অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করা ও উক্ত প্রক্রিয়া চলমান রাখার ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ দেশ যেখানে অর্থনৈতিক ক্রান্তিকাল পার করছে সেখানে সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখনও গতিশীল উন্নয়নে ধারাবাহিকতা প্রদর্শন করছে।