দুর্নীতি-অনিয়মে যেন ঢেকে গেছে সমগ্র বিশ্ব। এমনকি অনেকেই রয়েছেন, যারা ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে রীতিমতো জড়িয়ে পড়ছেন নানা অনিয়মে। আর সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি এবার সামনে এলো এমনই একটি খবর। জানা যায়, কেবিন ক্রু (Cabin crew) হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে এলেও বাস্তবে এর অন্তরালে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন তিনি।
আর এরই একপর্যায়ে অবশেষে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও প্রায়
৩ কোটি টাকার সোনাসহ সৌদি আরবের (Saudi Arabia) জেদ্দায় আটক হয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের (Biman Bangladesh Airlines) কেবিন ক্রু রুহুল (Cabin crew) আমিন শুভ।
বুধবার সকালে একটি ফ্লাইটে ওঠার ঠিক আগে সৌদি আরবের জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Jeddah International Airport) তাকে আটক করা হয়। এরপর বিমানলে ঘিরে বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সৌদি পুলিশ (Saudi police) সূত্রে জানা গেছে, তিনি বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইট বিজি ৪০৩৬-এর ফ্লাইট স্টুয়ার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিমানে ওঠার ঠিক আগে, তারা জানতে পারে যে তার লাগেজে প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণ (Gold) এবং বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। পরে পুলিশ তার ব্যাগ তল্লাশি করে প্রায় তিন কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করে। পুলিশ এসব সোনার কাগজ দেখতে চাইলে শুভ দেখাতে পারেনি। এরপর শুভকে ছাড়াই জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বিমানটি।
বেসামরিক বিমান চলাচল আইন অনুযায়ী, এই ধরনের ফ্লাইটে ১০ জন কেবিন ক্রু সদস্য প্রয়োজন। কিন্তু শুভ গ্রেফতার হওয়ায় আইন অমান্য করে ৯ জন ক্রু নিয়ে ঢাকায় আসেন পাইলট।
এ ঘটনায় শুভকে বরখাস্ত করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে শুভর নেতৃত্বে একটি চক্র দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার করে বিদেশ থেকে অবৈধভাবে সোনা নিয়ে আসত। বিমানে যোগদানের পর থেকে তিনি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিমানের তফসিল শাখার শাকিল নামের এক কর্মকর্তার সহায়তায় বিমানে বাহিনী গঠন করেন শুভ। দীর্ঘদিন ধরে এই বাহিনী সৌদি আরব ও দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে সোনা নিয়ে আসত। শাকিল শিডিউলিং শাখায় যোগদানের পর মোটা অংকের টাকা দিয়ে এই গ্রুপের সদস্যদের জন্য ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতেন।
এ ব্যাপারে আরও জানা গেছে, আর আগেও শাকিলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এলেও তা আমলে নিত না কর্তৃপক্ষ। আর এ ভাবেই রীতিমতো সবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে অনিয়ম করে আসছিলেন তিনি। এ বিষয়ে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিষয়টি খুতিয়ে দেখছেন তিনি।