বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন তুলেছেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করলে নির্বাচনে কারা অংশ নেবে। তিনি বলেন, “যদি স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাউকে নিষিদ্ধ করতেই হয়, তাহলে ২৮টি রাজনৈতিক দল বা তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলে নির্বাচনে অংশ নেবে কারা? যারা এখন রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের দাবি করছে, তারা পরে নিজেরাই বলতে পারে যে তারা নির্বাচনে যাবে না। তখন দেশে নির্বাচনের কী হবে? তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে। নিজেদের বাড়তি সুবিধার জন্য হয়তো তারা আরও দল নিষিদ্ধের দাবি তুলতে পারে।”
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গ আলাদাভাবে টেনে তিনি বলেন, “তারা গণহত্যার জন্য দায়ী, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী এবং দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য দায়ী। সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি এবং তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে।”
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, “দেশে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত না হয়, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার না আসে, তাহলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। সেই শূন্যতা জাতীয় ঐক্য নষ্ট করবে। ঐক্য ভেঙে গেলে পতিত ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে। তাদের হাত ধরে আঞ্চলিক শক্তি জড়িয়ে পড়তে পারে, এমনকি বৈশ্বিক শক্তিও সেই সুযোগ নিতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এই আশঙ্কাগুলো প্রকাশ করেই বলেছি, যদি আমরা নির্দিষ্ট সময়ে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে না পারি, তবে এসব আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। শুধু জাতীয় নিরাপত্তাই হুমকির মুখে পড়বে না, আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টিও এতে জড়িয়ে যেতে পারে।”
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, “আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে, আরও হবে। বিচার চলছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিটি আমরাই প্রথম করেছি। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। তারা দেশে রাজনীতি করতে পারবে কি না, নির্বাচন করতে পারবে কি না—সেটা আদালত ঠিক করবে। সেই প্রক্রিয়ায় যদি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ থাকে, তা আদালতে উত্থাপন করা যেতে পারে। আইন আগে ছিল না, এখন তো সংশোধিত হয়েছে। এটি আমাদের নতুন বক্তব্য নয়, আগের অবস্থান।”



