মডেল সানাই মাহবুব, যিনি স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক দাবি ও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন, আদালতে জানিয়েছেন যে স্বামী যদি ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তবে তিনি সংসার করতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালতে শুনানিকালে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সানাই। তিনি বলেন, “আমার বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। আমার দায়িত্ব যদি স্বামী না নেয়, তাহলে কে নেবে? অন্য কেউ নেবে?”
এই মামলায় সানাইয়ের স্বামী আবু সালেহ মূসা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক আপোসের শর্তে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম বলেন, “আদালতের সমনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি সংসার করার ইচ্ছা প্রকাশ করে হলফনামাও দিয়েছেন। আমরা চাই বিষয়টি আপোসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হোক।”
অন্যদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিঠুন সাহা জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, “আসামি বাদীর কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা নিয়েছেন এবং এখন আবার যৌতুক দাবি করছেন। তিনি অপরাধ করেছেন।”
আদালত তখন আসামি মূসাকে তার পেশা সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে মূসা বলেন, তিনি আগে ব্যাংকে চাকরি করতেন তবে বর্তমানে বেকার। শুনানিতে তিনি আরও জানান যে তিনি সানাইয়ের সঙ্গে সংসার করতে চান।
আদালতে দাঁড়িয়ে সানাই মাহবুব বলেন, “আমি আমার শাশুড়িকে সম্মান করি। কিন্তু সংসারে স্বামী যেমন স্ত্রীর দায়িত্ব নেয়, তেমন দায়িত্ব নিতে হবে। আমি ইতোমধ্যে বাসা ভাড়ার বড় অংশ নিজেই দিয়েছি, তারপরও সে টাকা চাইছে।”
তিনি আরও বলেন, “সে আমার কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা নিয়েছে। আমার কাছে ভয়েস রেকর্ডও আছে। এখন সে বলছে টাকা না দিলে সংসার করবে না। আমি কোথা থেকে টাকা আনব?”
শুনানি শেষে বিচারক বলেন, “মামলাটি আপোসযোগ্য। যেহেতু আসামি সংসার করতে চায়, তাকে সুযোগ দিতে হবে।” এরপর আপোসের শর্তে জামিন মঞ্জুর করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, আগামী মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন।
২০২২ সালের ২৭ মে সানাই মাহবুব ও আবু সালেহ মূসার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কনের পরিবার থেকে ১৫ ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্র দেওয়া হয়। পরে ব্যবসার কথা বলে মূসা সানাইয়ের কাছ থেকে ১২ লাখ এবং তার বাবার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে মূসা অতিরিক্ত ২২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দিলে সানাইকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং সংসার না করার হুমকি দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি সমাধানের জন্য সানাই একাধিকবার পারিবারিকভাবে চেষ্টা করেন। এমনকি গত ৭ ও ২২ জুলাই মূসাকে লিগ্যাল নোটিশও পাঠান। কিন্তু এরপরও অভিযোগ রয়েছে যে মূসা সানাইয়ের বাসায় গিয়ে টাকা দাবি করতে থাকেন।



