জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া তরুণীর চ*রম স*র্বনাশ করলো মাদরাসায় শিক্ষক

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক তরুণীকে (২২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে । ভুক্তভোগী আদালতে মামলা করেছেন। আদালত ২ সেপ্টেম্বর মির্জাপুর পুলিশকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ফেসবুকে মির্জাপুর উপজেলার আরাফাত হোসেনের সাথে একই উপজেলার ওই তরুণীর দেখা হয়। আরাফাত ফেসবুকে বিভিন্ন হাদিস ও ইসলামিক ঘটনা পোস্ট করে তার কাছে পাঠাতেন। পরে আরাফাত নানার বাড়িতে এলে তার সঙ্গে যোগাযোগ হতো। এক পর্যায়ে আরাফাত উপজেলার কাকলী মোড়ের গোল্ডেন স্পন হোটেল যেতে বলেন তাকে। ২৮ ডিসেম্বর হোটেলে গেলে আরাফাত ওয়াশরুমে তার ফোনের ক্যামেরা অন করে রাখেন এবং গোপনে তরুণীর ছবি ধারণ করেন।

পরে আরাফাত তরুণীকে তার কথিত বোন লাকী আক্তারের বাসায় নিয়ে যান। বাসায় যাওয়ার পর লাকী আক্তার তাকে আরাফাতের সঙ্গে বিয়ের কথা বলেন। পরে কৌশলে তিনি তরুণী ও আরাফাতকে অন্য একটি রুমে বসতে দিয়ে চলে যান। এসময় আরাফাত মোবাইলে ধারণ করা তার আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় লাকি আক্তারের সহায়তায় আরাফাত তাকে ধর্ষণ করেন। পরে তারা ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। ঘটনাটি কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল করার হুমকিও দেন।

পরবর্তীতে তারা বিয়ের প্রলোভন এবং মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ডিলিট করে দিবে বলে জানান। এরপর চলতি বছরের ৪ জুন আবার লাকী আক্তারের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ছবিগুলো ডিলিট করে দেওয়ার কথা বলে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পুলিশকে ফোন দিতে চাইলে আবারো লাকী আক্তারের সহযোগিতায় আরাফাত তাকে ধর্ষণ করেন।

এক পর্যায়ে জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি আরাফাতকে জানালে তার বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানাবে বলে জানান। পরে ৯ আগস্ট তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তরুণীকে নানা প্রকার খাবার খাওয়ান। কিন্তু সেখান থেকে বাড়িতে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পেটে ব্যথা শুরু হলে মির্জাপুর আধুনিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে জানান গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, তারা আমাকে মিথ্যা কথা বলে খাবারের মধ্যে ওষুধ মিশিয়ে খাইয়েছে। আমি এ ঘটনায় আদালতে মামলা করেছি। আমি জড়িত সবার বিচার দাবি করছি। আরাফাত হোসেন একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন।

এ ব্যাপারে বাদীর আইনজীবী রওশন আরা সিদ্দিকী বলেন, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন এবং মির্জাপুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মির্জাপুর উপজেলা জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়কারী মেরাজ মিয়া বলেন, আমাদের সাথে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন ওই তরুণী। আমরা এই ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করছি।

অভিযুক্ত আরাফাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তরুণী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং হাসপাতালে তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

Scroll to Top