সম্প্রতি, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর মধ্যে প্রকাশ্য বাকযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এটি এখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানি ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিএনপি এবং এনসিপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর, হাসনাত আবদুল্লাহ এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন যে বিএনপি আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন ভবনে ঘটনাটি ছিল একটি ‘টেস্ট ম্যাচ’।
সে সময় তিনি রুমিন ফারহানার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন যে বিএনপির মধ্যেও অনেকে আছেন, যারা আওয়ামী লীগের থেকেও বেশি আওয়ামী লীগ। তাদের মধ্যে অন্যতম রুমিন ফারহানা। তিনি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, ফ্ল্যাটভোগী এবং নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার চেষ্টাকারী।
পরে হাসনাত আবদুল্লাহ একটি ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নারীর রাজনৈতিক অবস্থান যা-ই হোক না কেন, তার শরীর, সম্পর্ক বা ব্যক্তিগত জীবনকে টেনে এনে স্লাটশেমিংয়ের অধিকার কারো নেই। আমি নিজে শ্রেণিঘৃণার শিকার হলেও, রুমিন ফারহানাসহ যেকোনো নারীর প্রতি স্লাটশেমিংয়ের বিরুদ্ধে আমার স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করছি।’
তবে হাসনাতের বক্তব্যের জবাবে সোমবার (২৫ আগস্ট) সোশ্যাল মিডিয়ায় রুমিন ফারহানা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সন্ধ্যা ৭:৪৭ মিনিটে তার যাচাইকৃত ফেসবুক পেজে পোস্ট করা পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এটা ওই ফকিন্নির বাচ্চাটা না, যে আমাকে আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক বলেছে?’
একই পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহর ছাত্রলীগ-সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরে কিছু ছবি ও স্ক্রিনশটও যুক্ত করেন। যদিও খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রুমিন ফারহানা শেয়ার করা ছাত্রলীগের সেই প্যাডটিই ভুয়া।
এর আগে, ফেসবুকে এনসিপি উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সার্জিস আলম সম্পর্কে একটি ভুয়া ছাত্রলীগের প্যাডও ছড়িয়ে পড়েছিল। শুধু তাই নয়, অনেকেই মজা করে একই ছাত্রলীগ প্যাডে ফুটবলার লিওনেল মেসির নাম যুক্ত করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। অন্য কথায়, ২০২২ সালে ছাত্রলীগ কমিটিতে হাসনাতের নাম সহ ভুয়া প্যাডটি শেয়ার করেছিলেন রুমিন ফারহানা।
তবে, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার মন্তব্য সহ পোস্টটি তাৎক্ষণিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই তার বক্তব্যকে ‘অশালীন’ও বলছেন। কেউ কেউ এর প্রতি সমর্থনও প্রকাশ করেছেন। ফলস্বরূপ, বিষয়টি নিয়ে নেট দুনিয়ায় ব্যাপক বিতর্ক চলছে।
এর আগের দিন, এনসিপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলার বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেছিলেন, আমি একজন নারী। শুনানিতে আমাকে প্রথমে ধাক্কা দেওয়া হয়। আমার লোকজন বসে থাকবে কেন? তাদের প্রতিক্রিয়ায় যা ঘটেছে, সেটা স্বাভাবিক। বিষয়টি অতিরঞ্জিত করার কিছু নেই।
পুরো ঘটনায়, রুমিন এবং হাসনাত উভয়ই তাদের অবস্থানে অনড়। তবে দুই রাজনৈতিক দলের দুই নেতার এই উত্তপ্ত মন্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং কটূ ভাষার ব্যবহার রাজনীতির শালীনতা ও ভদ্রতার প্রশ্নও সামনে এনেছে।



