রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বরখাস্তকৃত এসআই মাহবুব হাসানকে স্থানীয়রা তার বাড়ি থেকে টেনে বের করে মারধর করে এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাত ১১:৪৫ মিনিটে শহরের হাজর মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তাকে পুলিশ হেফাজতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শহরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, স্থানীয়রা মাহবুব হাসানকে মারধর করে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার বিরুদ্ধে শহরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি এখন ওই থানার হেফাজতে আছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহবুব হাসান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একজন এসআই ছিলেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলাও রয়েছে। নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকার ব্যবসায়ী মাসুদ রানা সরকার গত বছরের ২২ আগস্ট মামলাটি দায়ের করেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
২০২৪ সালের ২২ আগস্টে করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর তৎকালীন এসআই মাহবুব হাসান সাদাপোশাকে মাসুদ রানার বাড়িতে গিয়ে তার ছেলে রাজীব আলীর (৩১) মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে নগরের শিমলা বাগানে তুলে নিয়ে যান। এরপর মাসুদ রানাকে ফোন করে জানানো হয়, তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা না দিলে রাজীবকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে। শিমলা বাগানে গিয়ে মাহবুব হাসানের হাতে পাঁচ লাখ টাকা তুলে দেন মাসুদ রানা। এ সময় মাহবুব হাসান রাজীবের বাবাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন এবং রাজীবকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু পরদিন রাজীবকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ১৬ মাস কারাভোগের পর জামিন পান রাজীব।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত বছরের ২২ আগস্ট মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আরও মামলা আছে কিনা তা দেখা বাকি। মাহবুব হাসানের মাথায় আঘাত আছে। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

