বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমানের জুলাই মাসের বিক্ষোভকারীদের ‘কালো শক্তি’ বলে মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
রবিবার (২৪ আগস্ট) এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং মহাসচিব নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এর নিন্দা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম। সহস্রাধিক মানুষের জীবন, হাজার হাজার মুক্তিকামী জনতার রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরশাসন থেকে দেশবাসী আজাদি লাভ করে। অথচ জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়া সেই ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে ‘কালো শক্তি’ আখ্যায়িত করে প্রকারান্তরে জুলাই অভ্যুত্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা তার এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা ফজলুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী ভাষা প্রচার করে আসছেন। তিনি এই অভ্যুত্থানকে ‘অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র’ হিসেবেও উপস্থাপন করছেন। এমনকি অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে ক্রমাগতভাবে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে তীব্র কটাক্ষ করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ফ্যাসিবাদের প্রতীক আওয়ামী মুজিববাদ ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে নানা ভঙ্গিমায় তিনি মুজিব বন্দনাও করে যাচ্ছেন এবং অযাচিতভাবে মুক্তিযুদ্ধকে জুলাইয়ের মুখোমুখি দাঁড় করানো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু একটি দলের প্রধানের উপদেষ্টা পদে থেকে ধারাবাহিকভাবে এমন বক্তব্য দেওয়া হলেও তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি; বরং তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।
জাহিদ-সাদ্দাম আরও বলেন, ফজলুর রহমানের বক্তব্যে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ভাবমূর্তি স্পষ্ট। তিনি জুলাই যোদ্ধাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এবং অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে আসলে জুলাই গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে : আওয়ামীপ্রেমী ফজলুর রহমান গংদের লালন-পালনকারী দল রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে জুলাই শহীদ ও যোদ্ধারাই কি উল্টো বিচারের মুখোমুখি হবেন?
উদ্বেগ প্রকাশ করে ছাত্রশিবিরের দুই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, শহীদদের রক্তের উপর প্রতিষ্ঠিত সরকার ক্ষমতায় থাকলেও জুলাইয়ের আন্দোলনের সমালোচনাকারীদের গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের মতো প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, যা জুলাইয়ের শহীদদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। আমরা জরুরি ভিত্তিতে ফজলুর রহমানকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে তার কর্মকাণ্ডকে দলের জবাবদিহিতার আওতায় এনে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শাস্তি দেওয়া হোক। অন্যথায়, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তি যথাযথভাবে প্রতিশোধ নিতে বাধ্য হবে।



