আমরা সংসদ নির্বাচন চাই না: সামান্তা শারমিন

জাতীয় নাগরিক দল (এনসিপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন মন্তব্য করেছেন যে তিনি গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া জাতীয় নির্বাচন চান না।

তিনি বলেন, আমরা সংসদীয় নির্বাচনের কথা বলিও না, আমরা এটা চাইও না। আমরা মনে করি, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান করে তারপর রিস্টার্ট করবেন বাংলাদেশকে।

যুগান্তর মাল্টিমিডিয়ার সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথাগুলো বলেন।

ড. ইউনূসের জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা প্রসঙ্গে সামান্থা শারমিন বলেন, ফেব্রুয়ারিতে গণপরিষদ নির্বাচন হবে। আসন থেকেই তো সবাই নির্বাচন করবে। কিন্তু এটা গণপরিষদ নির্বাচনের উদ্দেশে- এটা বলতে হতো তো সবাইকে। আমরা যদি না বলি মানুষকে- তাহলে কী হবে এই নির্বাচনের পর, পরিবর্তন কী? আমরা তো একটা পার্টির কাছ থেকে আরেকটা পার্টির কাছে তুলে দিতে গণঅভ্যুত্থান ঘটাই নাই।

সামান্থা শারমিন বলেন, “বাংলাদেশে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র হবে এবং তারপর আপনি দেশ পরিচালনা করবেন। যদি বিএনপিও এর মাধ্যমে ম্যান্ডেট পায়, তাহলে বিএনপি দেশ পরিচালনা করবে।” যদি বিএনপির প্রস্তাব জনগণের পছন্দ হয়, তাহলে তারা গণপরিষদে জয়লাভ করবে এবং সংবিধান পরিবর্তন করবে।

‘সনদের বিষয়ে আমাদের কোনো আশা নেই’ উল্লেখ করে এই নেত্রী বলেন, কারণ সনদে এতো নোট অব ডিসেন্ট, অনেক বেশি কমপ্রোমাইজ এবং অনেক বেশি দলকে খুশি করার জন্য বিএনপি চাপ দিয়ে অনেক কিছু করিয়ে নিয়েছে। তাই সনদের আমি কোনো কার্যকরী কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

আলী রীয়াজ স্যারকে আগে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে, এখন তাকে তেমন মনে হচ্ছে না বলে দাবি করেন সামান্তা।

তিনি বলেন, কারণ তিনি (আলী রীয়াজ) কোনো পদ্ধতিই বের করতে পারছেন না। তাই এটার একমাত্র পদ্ধতিই হলো গণপরিষদ নির্বাচন। কারণ গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া আর কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধানের এতো এতো ধারা- প্রায় ৭০ শতাংশ পরির্বতন হয়ে যায়। এতো এতো ধারা এটাকে নির্দিষ্ট করতে পারবেন না। এটা পরিবর্তন করার পর এটা একই রকম থাকবে; পরে কোর্ট এসে কলমের এক খোঁচায় বাদ দিয়ে দেবে- এই সিস্টেমটা যদি থেকে যায়; তাহলে এই সনদ, এতো সময় নষ্ট ও এই ঘোষণাপত্রেরও তো গুরুত্ব নাই; কারণ পরেরবার কোর্ট এটা বাদ দিয়ে দেবে।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, পলিটিক্যাল সিস্টেমে আমরা সব সময়েই দেখেছি সুপ্রিম কোর্ট এখানে হস্তক্ষেপ করেছে এবং এটাকে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা কিন্তু আলাদা না। বিচার বিভাগ পুরোপুরি কিন্তু অধীন। মানে আমাদের আমলাতন্ত্র ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অধীন।

বিএনপিকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে যে তারা যদি আমাদের সংসদীয় নির্বাচনের দিকে ঠেলে দেয়, তাহলে তারা লাভবান হবে। আমরা সংসদীয় নির্বাচনের দিকে যাব না। ওই যে ৩০টা আসন ৫০টা সে হিসাব তো পড়ে। আর গণপরিষদ নির্বাচন সে রকম তো না। সেটা পুরো দেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে আসবে। আর তাদের ম্যান্ডেট থাকে সংবিধানকেন্দ্রিক। এলাকায় কী উন্নয়ন করছে, কয়টা টিউবওয়েল বানিয়েছে, কয়টা পুকুর খনন করছে, নির্বাচনের আগে রাতে কারে কয় টাকা দিছে- এটা দিয়ে আর নির্ভর করবে না গণপরিষদ নির্বাচন। আমার ধারণা- এই পুরোনো যে সিস্টেম যেগুলো কথা বললাম- এগুলো অভ্যস্ত বিএনপি। এ কারণে বিএনপি আমাদের ক্রমাগত সংসদীয় নির্বাচনের দিকে ধাবিত করছে। কিন্তু আমাদের পার্টির দিক থেকে আমরা পরিষ্কার- বর্তমানে গণপরিষদ নির্বাচনই একমাত্র পথ।

Scroll to Top