‘হেল্প হেল্প’ বলে দৌড়ে গিয়ে শিক্ষকের গ*লায় ছু*রি চালাল ছাত্রী, ভিডিও ভাইরাল

রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষকের গলায় ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রী (১৬) বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে কলেজের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, দুপুরে ক্লাস শেষে বের হয়ে যাচ্ছিলেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক মারুফ কারখী। এ সময় কলেজের ফটকের সামনে প্রকাশ্যে ওই ছাত্রী উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। শিক্ষককে উদ্ধার করে রাজশাহীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়া হয়। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ছাত্রীকে ২০২৩ সালে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কলেজের গেটের সামনে এক ছাত্রী ‘হেল্প হেল্প’ বলে চিৎকার করে দৌড়াচ্ছিল। এ সময় শিক্ষক মারুফ মোটরসাইকেলে করে তার কাছে আসেন। কিছু বোঝার আগেই মেয়েটি মারুফের গলায় একাধিক ছুরিকাঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মারুফ কারখীকে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে ঘটনার পর উপস্থিত লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্রীটিকে ঘিরে ফেলে। ঘটনার পর স্কুলের সামনের ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রীরা চিৎকার ও দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে স্কুল ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে, মেয়েটিকে তার পরিবারের হেফাজতে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ধারণ করা মেয়েটির একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

স্কুলের একজন নিরাপত্তারক্ষী জানিয়েছেন যে ২০২৩ সালে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য স্কুল থেকে তাকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দেওয়া হয়েছিল। সে এখন বিজিবি পরিচালিত শহীদ কর্নেল কাজী এমদাদুল হক স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।

আহত শিক্ষক মারুফ কারখী বলেন, “স্কুল শেষে আমি মোটরসাইকেলে করে প্রধান ফটকের দিকে যাচ্ছিলাম। সেই সময় আমি মেয়েটিকে চিৎকার করতে করতে দৌড়াতে দেখলাম। তাকে দেখেই আমার মনে হলো অপহরণকারীরা হয়তো তার ভ্যানিটি ব্যাগটি নিয়ে যাচ্ছে। তাকে ধরার জন্য তাদের মোটরসাইকেলের প্রয়োজন। তাই সে ‘হেল্প হেল্প’ বলে চিৎকার করছিল। আমি তাকে চিনতে না পেরে দ্রুত এগিয়ে গেলাম। তারপর হঠাৎ সে আমার গলা লক্ষ্য করে আমাকে ছুরিকাঘাত করে। আমি হাত দিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে আমি গুরুতর আহত হই। পরে, যখন সে সিএমএইচে যায়, তখন তার গলায় তিনটি সেলাই এবং হাতে পাঁচটি সেলাই পড়ে। ডাক্তাররা তাকে বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন।”

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভাবিনি যে আমি তার লক্ষ্য। কিন্তু সে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। পাগলের মতো সে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করছিল এবং বলছিল, ‘ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে যাকে পাবো তাকেই হত্যা করব।’ এই ঘটনার পর, মেয়েটির পরিবার তাকে তুলে নিয়ে যায়। কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা তা স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

Scroll to Top