যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) দুই বিচারক এবং দুই প্রসিকিউটরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচারে আইসিসির নেওয়া পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটনের চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন আইসিসির ফরাসি বিচারক নিকোলাস গুইলু, ফিজির নাজহাত শামীম খান, সেনেগালের মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং এবং কানাডার প্রসিকিউটর কিম্বারলি প্রোস্ট।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র দপ্তর এক ঘোষণায় এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বছরের নভেম্বরে আইসিসির বিচারকরা গাজা সংঘাতে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত এবং হামাস নেতা ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
আইসিসির প্রাক-বিচার প্যানেলের বিচারক নিকোলাস গুইলু নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘোষণা দেন। এ সময় প্যানেলের প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন নাজহাত শামীম খান ও মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং।
প্রায় তিন মাস আগে ট্রাম্প প্রশাসন একইভাবে আইসিসির আরও চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। সেই সময় ওয়াশিংটন বলেছিল, এসব বিচারক আদালতের “অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপে” জড়িত, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র ইসরায়েলকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।
গত জুনে আইসিসি ওয়াশিংটনের কড়া সমালোচনা করে জানিয়েছিল, এটি আদালতের স্বাধীনতাকে খর্ব করার চেষ্টা। বুধবারের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আইসিসি এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত আইসিসি গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার করার এখতিয়ার রাখে—যদি তা সদস্য রাষ্ট্রে ঘটে অথবা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ থেকে রেফার করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েল আদালতের সদস্য নয়।
বর্তমানে আইসিসি বেশ কিছু উচ্চপর্যায়ের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ, রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন, সুদান, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, ভেনেজুয়েলা ও আফগানিস্তান। সর্বশেষ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে সংশ্লিষ্টদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা যেকোনো সম্পদ জব্দ করা হবে এবং তারা কার্যত মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার বাইরে চলে যাবেন।



