চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের গাজীর বাড়ির ওমর ফারুক ওরফে জামাই ফারুক আবারও অপরাধ কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে স্থানীয়দের মধ্যে শঙ্কা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গরু চুরি, মাছ চুরি, তার চুরি থেকে শুরু করে মাদকসহ নানা অবৈধ কার্যক্রমে তার নাম জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামাই ফারুক মূলত আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। নানা অপরাধে জড়িয়ে দীর্ঘদিন আগেই নিজ গ্রাম থেকে বিতাড়িত হন এবং পরে স্ত্রীর বাড়ি পটিয়ার গাজীর বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জামাই ফারুক চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস সংলগ্ন কুখ্যাত নুরুল ইসলাম ডাকাতের ঘনিষ্ঠ এবং গরু চুরির চক্রের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পৌর সদরের শেয়ানপাড়া ও ব্রাহ্মণপাড়ায় তার কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। তারা রাতে গরু ও পুকুরের মাছ চুরি, বিদ্যুতের তার চুরি, ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের মতো অপরাধে জড়িত।
স্থানীয়রা জানান, এ চক্রের দৌরাত্ম্যে রাতে কেউ নিরাপদ নয়, যার ফলে পটিয়ার শান্তিপ্রিয় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রায় দুই বছর আগে পটিয়ায় এস আলম বাড়ির সামনে একটি দোকানে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জামাই ফারুককে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও অপরাধের পথে ফিরে আসেন।
২০২৪ সালে এলাকার লোকজন ও স্বজনরা লিখিত স্ট্যাম্প নিয়ে তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করেন। কিন্তু গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে তিনি ফিরে এসে পুনরায় অপরাধ চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “জামাই ফারুকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই হুমকি আসে। সে গর্ব করে বলে, ‘আমি চুরি করি, কেউ কখনো ধরতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।’ তার দুঃসাহস এখন সীমাহীন।”
এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, দ্রুত তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। তারা দাবি করেন, এ চক্রকে গ্রেপ্তার করলে অনেক পুরনো গরু চুরির রহস্য উদঘাটিত হবে।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান বলেন, “জামাই ফারুকের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করা হচ্ছে। কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধী যেই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না।”

