‘আমরাই সাহায্য করেছি ওবায়দুল কাদেরকে পালাতে বলা সেই যুবদল নেতার পরিনতি

যশোর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), যিনি এর আগে দাবি করেছিলেন যে, যুবদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেশ ছাড়তে সহায়তা করেছিলেন। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার তালতলা টেক এলাকার দক্ষিণ নামাপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম ইস্কান্দার আলী ওরফে জনি (৪২)। তিনি যশোর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক। যশোর জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল হক ভূঁইয়া জানান, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও আইসিটি আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি ঢাকার খিলক্ষেতের দক্ষিণ নামাপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন।

যশোর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল জানিয়েছে, জনি জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলামের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এছাড়া তিনি জেলা বিএনপি সভাপতি ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার, কুৎসা রটনা এবং হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

মিডিয়া সেল আরও জানায়, জনি ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করেন, “যশোর সেনানিবাসে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ভারতে পালাতে সহায়তা করেছিলেন যুবদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে সদস্য-সচিব) আনসারুল হক।”

এই ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছড়িয়ে সেনাবাহিনী ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়। মামলার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে যাচ্ছিলেন।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার রাতে যশোর ডিবির একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে জনিকে আদালতে পাঠানো হবে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, যুবদলের পদে থাকাকালীন ইস্কান্দার আলী একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বিরূপ ও মানহানিকর মন্তব্য করেন, যা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি তিনি হঠাৎ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করেন, যশোর যুবদলের শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালের পরিবারকে ভারতে পালাতে সহায়তা করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে আবারও একই দাবি পুনরায় করেন।

তার এই বক্তব্য ঘিরে তখন ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে যশোর জেলা বিএনপি ও যুবদলের শীর্ষ নেতারা তার বক্তব্যকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

Scroll to Top