বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটির এ কে খন্দকার প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত ফিউনারেল প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান, সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, তৌকিরের সহকর্মী এবং শোকাহত পরিবার।
প্যারেডে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিমানপ্রধান কণ্ঠ রুদ্ধ করে জানান, তৌকির ইসলাম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন বিমানটিকে নিরাপদ স্থানে অবতরণ করাতে। তবে দুর্ভাগ্যবশত সেটি সফল হয়নি। বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে জরুরি নির্গমনের সময় পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন তৌকির।
তিনি বলেন, “দেশের এই দুঃসময়ে ফায়ার সার্ভিস, চিকিৎসক, প্রশাসন, শিক্ষার্থী এবং রাজনৈতিক নেতারা সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় এবং আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যেই উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তদন্তে কোনো গাফিলতির প্রমাণ মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
প্রশিক্ষণ বিমানের প্রযুক্তি বা মেয়াদ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিমানপ্রধান বলেন, “প্রতিটি বিমানের কার্যক্ষমতা থাকে প্রায় ৩০ বছর। বিধ্বস্ত বিমানটি পুরোনো ছিল না, তবে এর প্রযুক্তি কিছুটা পুরোনো হতে পারে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিমানবাহিনী কখনো আপস করে না।”
দেশবাসীর উদ্দেশে এয়ার চিফ মার্শাল আহ্বান জানান, কেউ যেন এই দুর্ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবে কান না দেয়। একটি শক্তিশালী বিমানবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তার অংশ—এটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার মানে দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র।
সবশেষে নিহত ও আহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সবসময় তাদের পাশে থাকবে।”



