তারেক রহমানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে চমক: বাদ পড়ছেন অনেক হেভিওয়েট নেতা

লন্ডনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারিত হয়—আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ। বৈঠকের পর থেকেই জোরেশোরে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি।

দলটি ইতোমধ্যেই ধরে নিয়েছে, নির্বাচন ফেব্রুয়ারির শুরুতেই অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী সাংগঠনিক প্রস্তুতির পাশাপাশি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রার্থী বাছাই। বিশেষ করে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর বিএনপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সব আসনেই একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং অনেকে এরই মধ্যে মাঠে গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন।

বিএনপি হাইকমান্ড জানিয়েছে, উপযুক্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ইতোমধ্যে কয়েক দফা জরিপ চালানো হয়েছে, এবং এখনো চলমান রয়েছে। ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের বর্তমান জনপ্রিয়তা, দলীয় অবদান এবং জনসম্পৃক্ততাও বিশ্লেষণের আওতায় আনা হয়েছে।

মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় তিনটি মৌলিক যোগ্যতাকে নির্ধারণ করা হয়েছে চূড়ান্ত মানদণ্ড হিসেবে। এই তিনটি যোগ্যতা না থাকলে প্রার্থীর নাম বাদ যাবে তালিকা থেকে।

১. দল ও দেশের জন্য ত্যাগ — গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যিনি দৃশ্যমান ত্যাগ স্বীকার করেছেন।

২. ব্যক্তিগত সততা ও জনপ্রিয়তা — যিনি সততার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ এবং এলাকায় একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে পরিচিত।

৩. নির্বাচনি জনপ্রিয়তা — যার এলাকায় সরাসরি জনভিত্তি আছে এবং ভোটের রাজনীতিতে যিনি কার্যকর।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতার মতে, এবারের প্রার্থী তালিকায় থাকবে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত চমক। এমন অনেক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে, যাঁদের নাম রাজনীতির আলোচনায় নেই। আবার দলের কিছু প্রভাবশালী সিনিয়র নেতাও এবার মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে পারেন।

সূত্র বলছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ব্যক্তিগতভাবে অনেক নেতার কার্যক্রম, জনপ্রিয়তা ও নৈতিক অবস্থান সম্পর্কে অবগত আছেন। অনেক আগে থেকেই তাঁর কাছে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের একটি বিশদ রিপোর্ট বা ‘আমলনামা’ রয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তরুণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতে পারে এবার। তবে দলের বৃহত্তর স্বার্থে নবীন-প্রবীণের মধ্যে ভারসাম্য রেখে তালিকা তৈরি করা হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারের একাধিক সদস্যও নির্বাচন করতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া জোট রাজনীতির সমীকরণ বিবেচনায় রেখে কিছু আসন মিত্রদের জন্য ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত বিএনপি। সবমিলিয়ে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় এবার বিএনপির পক্ষ থেকে থাকছে চমক, ব্যতিক্রম এবং দায়িত্বশীল রাজনৈতিক বার্তা।

Scroll to Top