ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত এক সদস্যকে দেখিয়ে দাবি করা হয়—তিনি গোপালগঞ্জের ঘটনার পর চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান টিম তথ্য যাচাই করে জানায়, এ দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর।
ফ্যাক্টওয়াচ হলো লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ও সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা। তারা নিয়মিতভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো গুজব যাচাই করে সত্য তুলে ধরছে।
সামরিক অভিযানের ভিডিও ছিল পুরোনো
এদিকে, গোপালগঞ্জে সামরিক অভিযান চলছে দাবি করে একটি ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর অধীনে কাজ করা ‘বাংলা ফ্যাক্ট’ টিম রিভার্স ইমেজ সার্চ ও গণমাধ্যম সূত্রে নিশ্চিত করেছে—ভিডিওটি নতুন নয়। এটি মূলত মোহাম্মদপুরে ২০ ফেব্রুয়ারি যৌথবাহিনীর একটি অভিযানের ভিডিও, যেখানে চাঁদ উদ্যান এলাকায় সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালানো হয়।
এই ভিডিওটি ‘সময় টেলিভিশন’-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয় এবং একই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ ২০ ফেব্রুয়ারি দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পাওয়া যায়। ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে, তা গোপালগঞ্জের সামরিক অভিযান নয় বরং পুরোনো একটি শহরভিত্তিক অপরাধবিরোধী অভিযান।
কারফিউ ঘিরে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা
১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করে। সেই রাতেই সামাজিক মাধ্যমে একটি সামরিক অভিযানের গুজব ছড়ানো হয়, যা ছিল পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি তৈরির উদ্দেশ্যে প্রচারিত।
দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখছে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ফ্যাক্টওয়াচ ও বাংলা ফ্যাক্টের মতো সংস্থাগুলো গুজব, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ভিডিও শনাক্ত করে জনগণকে সত্য জানাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। তাদের তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে স্পষ্ট হচ্ছে—গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেক মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, যা থেকে সচেতন থাকা জরুরি।
সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে, যাচাই ছাড়া কোনো তথ্য বা ভিডিও শেয়ার না করতে এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণা প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে।



