অসচেতনতার ফলে প্রায় প্রতিদিনই সড়কে ঝরে পড়ছে অগুণিত প্রাণ। ইতিপূর্বে এ ব্যাপারে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও, তা পুরোপুরি ভাবে বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। আর তাই নিরাপদ সড়কের দাবি রীতিমতো মাঠে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি এই দাবি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সড়কে অবস্থান করছেন তারা। এরই জের ধরে এবার মুখ খুললেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীসহ সব নাগরিকের জন্য দেশের সড়কগুলো অনিরাপদ। ২৮ বছর ধরে আমরা যে কথাগুলো বলে আসছি এবং সড়ক নিরাপত্তার জন্য যে পরামর্শগুলো দিয়ে আসছি, সেগুলো যাদের বাস্তবায়ন করার কথা তা হচ্ছে না। এ জন্য সড়কও নিরাপদ হচ্ছে না।’
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, পরিবহন খাতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা সেই মান্ধাতার আমলের ধ্যান-ধারণা নিয়ে চলছেন। আবার পরিবহন খাতের মানুষগুলোকে যে সভ্যতার মধ্যে আনা দরকার ছিল এবং তাদের যে ধৈর্যশীল হওয়ার কথা ছিল সেই কাজটি না করে তাদের আরও বেপরোয়া এবং অধৈর্যশীল করা হয়েছে। আর এটি হয়েছে পরিবহন খাতের নেতৃত্বের কারণে। একই কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও থামছে না। আবার সড়ক নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্ট নতুন আইনটিরও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আর এটি পরিবহন খাতের নেতৃত্ব এবং তাদের বিরোধিতার কারণে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সরকারকে এ আইনটির বাস্তবায়ন করতে হবে। সড়ক নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্টরা যে উপদেশ দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। সড়ক নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ২৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলোর একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। যে দেশে প্রধানমন্ত্রীর কথার বাস্তবায়ন হয় না সে দেশে কীভাবে কী হবে! এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারের দায়িত্বশীলদের নতুন করে ভাবতে হবে যে সরকার প্রধানের নির্দেশনা কেন বাস্তবায়িত হলো না।
তিনি আরও বলেন, সড়ক দেখভালের জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের লোকেরা একটি কমিটি করেছিলেন। সেই কমিটিরও কার্যক্রম ও তৎপরতা কোনো কিছু নেই। এ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সচিবের মাধ্যমে করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কমিটি কোথায় এখন? যেসব দাবির প্রেক্ষাপটে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হবে, তা বাস্তবায়িত হলো কি না তা দেখভালের দায়িত্ব এই কমিটির ছিল।
ইলিয়াস কাঞ্চন। বাংলা রুপালী জগতের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা। ক্যারিয়ারে একাধিক ব্যবসায় সফল সিনেমায় অভিনয় করে কোটি দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনের মৃত্যুর পর থেকে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন গড়ে তুলেন এই অভিনেতা। বর্তমানেও এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।