ফ্রিতে নৌকা না পেয়ে কর্মচারীকে পেটালেন অতিরিক্ত ডিআইজি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় পর্যটন ঘাটে কর্মরত উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মচারীকে ফ্রিতে নৌকা না দেওয়ায় সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নাসির উদ্দিন আহমেদ তাকে বেধড়ক পিটিয়েছেন। এই ঘটনায় সিলেট জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের নৌকা ঘাটে কর্মরত উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী জাবেদ আহমেদের সাথে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী জাবেদ আহমেদ জানান যে তিনি বেসামরিক পোশাক পরে নৌকা ঘাটে গিয়ে ঘাট কর্মীদের কাছ থেকে নৌকা চেয়েছিলেন। আমরা তাকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আটশ টাকা প্রদান করে নৌকা নেওয়ার কথা জানানোর সাথে সাথে তিনি রেগে যান এবং বলেন, আমাকে চিনিস আমি অ্যাডিশনাল ডিআইজি। আমি টাকা দিয়ে কেন নৌকা নেব কেন। এ কথা বলেই অনেক মানুষের সামনে তিনি আমাকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মেরে চলে যান। এসময় কোম্পানীগঞ্জ থানার একজন এসআই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। ঘটনার পর খবর পেয়ে নৌকাঘাটের মাঝিরা প্রতিবাদ করে কিছু সময় নৌকা চালানো বন্ধ করে দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসি স্যার এসে সবাইকে সান্ত্বনা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

এমরান আহমেদ নামে এক যুবক বলেন, পুলিশ বাহিনীর একজন সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হয়ে অন্য একজন ছোট কর্মচারীর ওপর হাত তোলার ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত ও লজ্জিত হয়েছে। এ কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানাই।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, “কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি। নৌকা ঘাটে কর্মরত একজনের সাথে স্যারের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার আবুল হাসনাত বলেন, “আমি নৌকা ঘাটে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি স্যার এবং প্রশাসনে কর্মরত একজন কর্মচারীর মধ্যে ঝামেলার কথা শুনেছি। আমি বিষয়টি পুরোপুরি জানি না। ঘটনার খবর পেয়ে ইউএনও স্যার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, তিনিই আপনাকে আরও ভালো বলতে পারবেন।”

আমি সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নাসির উদ্দিন আহমেদের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।


হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে ট্রাম্পের পোস্ট ঘিরে তোলপাড়, যা জানা গেল

শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার বিষয়ে সম্প্রতি একটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পোস্টটিতে দাবি করা হয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশে ফিরছেন।” তবে এই দাবির সত্যতা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় জীবন বাঁচাতে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে তাকে বিচারের সম্মুখীন হওয়ার দাবি তুলে সড়কগুলোতে প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল। তবে বর্তমানে যে পোস্টটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা আসলে ট্রাম্পের আসল অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়নি।

অবিশ্বাস্যভাবে, এই পোস্টটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে একটি ফ্যান অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে, যার স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ১৩ মার্চ এক্স (টুইটার) থেকে করা একটি পোস্টে দেখা যাচ্ছে যে এটি আসল ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাকাউন্ট নয়, বরং তার নাম ব্যবহার করে তৈরি করা একটি প্যারোডি বা ফ্যান অ্যাকাউন্ট।

এছাড়াও, এক্সের নিয়ম অনুসারে, প্যারোডি বা ফ্যান অ্যাকাউন্টের নাম এবং জীবনীতে স্পষ্টভাবে বলা উচিত যে তারা মূল ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত নয়। যদিও এই ধরণের অ্যাকাউন্টগুলি যাচাই করা যেতে পারে, তবুও ট্রাম্প যে এই ধরণের পোস্ট করেছেন তার কোনও প্রমাণ নেই।

প্রকৃতপক্ষে, শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার বিষয়ে ট্রাম্পের আসল অ্যাকাউন্টে কোনও পোস্ট পাওয়া যায়নি। ফলস্বরূপ, ট্রাম্পের নাম ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পোস্টটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।

যমুনা ইলেকট্রনিক্স এই বিষয়টি আরও বিশদে তদন্ত করেছে এবং তারা নিশ্চিত করেছে যে এই পোস্টের সাথে ট্রাম্পের কোনও সম্পর্ক নেই।

প্রমাণিত হয়েছে যে শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনও মন্তব্য বা পোস্ট ছিল না এবং এটি সম্পূর্ণ গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়।