ছাত্রদলের ২৮ সদস্যদের কমিটি ঘোষণা, সভাপতিসহ ১৫ নেতার পদত্যাগ

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পরপরই দলের সভাপতি ও ১৫ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। তাদের অভিযোগ, নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রশিবির, অছাত্র ও ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের জায়গা দেওয়া হয়েছে।

পদত্যাগকারী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন নবনিযুক্ত সভাপতি আশরাফুল হক, সহসভাপতি হাসান আল বান্না, আব্দুল কাদের, শাহ আলম মিয়া, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মো. ইব্রাহীম, শাকিল আহমেদ, মাহমুদুল হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন সিকদার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু সালেহ মানিক, দপ্তর সম্পাদক সাহেদ আলম, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সমাজসেবা সম্পাদক তৌফিক এলাহী এবং ক্রীড়া সম্পাদক রাকিব হোসেন মজুমদার।

শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছিরউদ্দিন নাছির এ কমিটি ঘোষণা করেন।

নতুন কমিটিতে আশরাফুল হককে সভাপতি ও জামিরুল ইসলাম জামিলকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি, এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তবে কমিটি ঘোষণার পরপরই নেতারা গণপদত্যাগ করেন। পদত্যাগকারী নেতাদের অভিযোগ, যাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, তিনি ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত। বিষয়টি আগেই কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হলেও, কোনো অজানা কারণে তাকে পদায়ন করেই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আদর্শগত দিক থেকে তার সঙ্গে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।

তারা আরও বলেন, কমিটিতে বিবাহিত ও অছাত্রদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে আদর্শিক ছাত্র রাজনীতির কোনো জায়গা নেই। এক নম্বর সহসভাপতি করা হয়েছে বিবাহিত ও অছাত্র আরাফাত হোসেনকে। অন্যদিকে, ইমন মোল্লার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার প্রমাণ রয়েছে।

নেতাদের দাবি, ছাত্রদল আদর্শিক রাজনীতির সংগঠন। সেখানে ছাত্রশিবির, অছাত্র ও ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্তির ফলে আদর্শের রাজনীতি বজায় রাখা অসম্ভব।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক টিমের সদস্য মিয়া মোহাম্মদ রাসেল বলেন, “সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার যে অভিযোগ উঠেছে, তার কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”


ছাত্রনেতারা যা করছে জানলে গা শিউরে উঠবে: নুর

রাজধানীর কাকরাইলের আইডিবি মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের বর্ধিত সভায় দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, “এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে, এবার আর নীরব থাকব না।”

তিনি অভিযোগ করেন, গত ছয় মাসে গণহত্যার ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারের কোনো স্বচ্ছতা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সংবাদ সম্মেলন করে আহতদের অবস্থা প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া, আহত ও নিহতদের ক্ষেত্রে যে বৈষম্য করা হয়েছে, সেটি সংশোধন করা জরুরি।

নুর বলেন, “গত ছয় মাসে বিভিন্ন কমিউনিটির ন্যায্য দাবি-দাওয়াগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। কোনো সংস্কার বাস্তবায়নের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। দেশ এখনো পুরনো ধাঁচেই চলছে, অথচ এখন সময় জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার ছাত্রনেতাদের ডিসি অফিসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ এবং কোটি কোটি টাকার লোভ দেখাচ্ছে। এসব সুবিধার মাধ্যমে ছাত্রনেতাদের নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

নুর অভিযোগ করেন, “বর্তমানে ছাত্র উপদেষ্টারা সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন খাত নিয়ন্ত্রণ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, ছাত্রনেতারা কী ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত। সেটি জানলে গা শিউরে উঠবে। আমরা চাই, ছাত্ররা সৎ ও নীতিবান রাজনীতিতে ফিরে আসুক।”

তিনি আরও বলেন, “দেশি-বিদেশি চক্রান্ত চলছে। বিভিন্ন গোষ্ঠীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেনাপ্রধানও বলেছেন, ‘এনাফ ইজ এনাফ।’ দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে, নয়তো সংকট আরও ঘনীভূত হবে।”

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তারা কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব পেয়েছেন, এমনকি সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, “আমরা তখন তা প্রত্যাখ্যান করেছি, কারণ শেখ হাসিনার সরকার রাজনীতিকে কোরবানির পশুর মতো কেনাবেচা করছে। এখনো সেই প্রবণতা চলছে।”