অবশেষে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন নাহিদ ইসলাম

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মো. নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেছেন বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সম্প্রতি গঠিত হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যই তার পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এই দল গঠিত হচ্ছে, যেখানে নাহিদ ইসলাম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।

আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নতুন রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।

নতুন দলে যুক্ত হতে যাওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন দলে নেতৃত্বে আসছেন। শুরু থেকেই নাহিদ ইসলামের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো বিতর্ক ছিল না, তবে সদস্যসচিব পদে কারা আসবেন তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে এই পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

দলের মূল সংগঠক ও মুখপাত্র হিসেবে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে দেখা যেতে পারে। এছাড়া, জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে থাকা ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আলী আহসান জোনায়েদের নাম আলোচনায় আছে। পাশাপাশি, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত হন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন এবং ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন নাহিদ ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পরে মাহফুজ আলম প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে এবং পরে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান।

ঢাকার বনশ্রীর বাসিন্দা নাহিদ ইসলাম ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত।


পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সাথে সোহেল তাজ জড়িত, যা বললেন ইলিয়াস

প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে দাবি করেছেন যে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সোহেল তাজের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইলিয়াস বলেন, তিনি সেনা সূত্র থেকে এ তথ্য পেয়েছেন এবং মনে করেন, সোহেল তাজ যেন আপাতত দেশের বাইরে যেতে না পারেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের নামে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তবে সেই সময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।

এর আগে বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোহেল তাজ জানিয়েছিলেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরামর্শ গ্রহণ না করে তাকে ধমক দিয়েছিলেন— ‘আমেরিকায় বসে তুমি বেশি বুঝো না, আমি দেখছি।’

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন তিনি ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশের আইজিপির সঙ্গে যোগাযোগ করেন, পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও কথা বলেন। তবে প্রধানমন্ত্রী তার পরামর্শ গ্রহণ করেননি বলে তিনি দাবি করেন।

ঘটনার পটভূমি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সোহেল তাজ বলেন, তাকে এই বিদ্রোহের সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন নিরপরাধ ব্যক্তির ওপর এমন অপবাদ দেওয়া উচিত নয়।

বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্যে কী ছিল— এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রী থাকাকালীন তিনি কিছুই বুঝতে পারেননি এবং দায়িত্ব ছাড়ার পর এসব বিষয়ে জানা বা বোঝার সুযোগও তার হয়নি।

এর আগে ১৫ আগস্ট এক ফেসবুক পোস্টে সোহেল তাজ লিখেছিলেন, সত্য বলার সময় এসেছে। সত্যই সবচেয়ে বড় শক্তি। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। একজন মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার আত্মসম্মান ও মর্যাদা, আর সত্যই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ও ঢাল।