নির্বাচন করতে হলে পদত্যাগ করতে হবে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎকার এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সরকারের একজন উপদেষ্টার বক্তব্য প্রসঙ্গে মানবজমিনকে তিনি এ কথা বলেন।

বিবিসি বাংলার সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষতার মান বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”

এর প্রতিক্রিয়ায় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেন যে, বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আসলে আরেকটি ১/১১ সরকারের ইঙ্গিত।

এ বিষয়ে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে আমি কোনো অযৌক্তিকতা দেখি না। তিনি সঠিকভাবেই বলেছেন যে, যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করতে হবে। আমরা বহুদিন ধরে নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি। যদি ক্ষমতায় থেকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালিত হয়, তাহলে তা কখনোই সুষ্ঠু হবে না।”

তিনি আরও বলেন, “আপনি সরকারের অংশ হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেবেন এবং একইসঙ্গে নিজ দল গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন, এটি ন্যায্য নয়। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে অবশ্যই ক্ষমতা ছাড়তে হবে।”

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও উল্লেখ করেন যে, বিএনপি প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন দেখতে চায়। “আমরা একটি সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই, যেখানে জনগণ তাদের ভোটের অধিকার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারবে,” যোগ করেন তিনি।


ফেলানী হ*ত্যার বিষয়টি নিয়ে সারা বিশ্ব ভারতকে ছি ছি করেছে : জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সারা বিশ্বে ভারতের প্রতি নিন্দা ও ঘৃণার জন্ম দিয়েছে। সরকার চাইলে ফেলানী হত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনিটারী গ্রামে ফেলানীর কবর জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে লজ্জিত যে, ১৪ বছর পর ফেলানীর বাড়িতে আসতে পেরেছি। আরও আগে আসা উচিত ছিল। কিন্তু কেন আসতে পারিনি, তা আপনারা ভালো জানেন। ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুধু তার পরিবার নয়, পুরো বাংলাদেশ গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছে। এ ঘটনার জন্য সারা বিশ্ব ভারতের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।”

ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করেছি, বিবৃতি দিয়েছি এবং বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেছি। আমরা ন্যায়বিচার চাই। বর্তমান সরকারের উচিত এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া, যদিও এটি একটি অস্থায়ী সরকার।”

তিনি আরও বলেন, “ফেলানীর পরিবার ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন ‘বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ (মাসুম)-এর সহযোগিতায় সর্বোচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেছে। সেখানে আমাদের সহায়তা প্রয়োজন হলে আমরা তা করব।”

কবর জিয়ারত শেষে জামায়াত আমির ফেলানীর পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি ফেলানীর বাবার হাতে নগদ অর্থ এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার সামগ্রী তুলে দেন। পরে স্থানীয় একটি পথসভায় বক্তব্য দেন।

পথসভায় তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ঐক্যবদ্ধ থেকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।