বাংলাদেশ দখল করতে ভারতের ভয়াবহ পরিকল্পনা ফাঁস! (ভিডিওসহ)

বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও সামরিক দুর্বলতা নিয়ে সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন রাজনীতি বিশ্লেষক এবং লেখক কর্নেল মো. আব্দুল হক। এক টকশোতে তিনি দাবি করেন, ভারতের আধিপত্য বিস্তার নীতির কারণে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।

কর্নেল হক বলেন, “বাংলাদেশের প্রশাসনিক এবং সামরিক কাঠামো বর্তমানে ভয়াবহ দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা ও ব্যক্তিস্বার্থে লিপ্ততা দেশকে এক সংকটজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। এমনকি আমলাতান্ত্রিক দুর্বলতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বর্তমানে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা, যাদের মধ্যে অনেকেই শপথ নিয়েছে দেশের জন্য নিজের জীবন দিতে। কিন্তু ভারতের পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। তাদের সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে দেশের প্রতি সেই ধরনের মমত্ববোধ ও নিষ্ঠা লক্ষ্য করা যায় না, যা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে রয়েছে।”

কর্নেল হক সতর্ক করে বলেন, “ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে সামরিক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তাহলে তাদের সেনাবাহিনী দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, কারণ তাদের দেশের প্রতি ঐক্য এবং অনুগত মনোভাব বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মতো নয়।”

তিনি বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে ভারতের নানা বিরক্তির কথাও উল্লেখ করেন। তার মতে, “যদি বর্ডারে কোনো সামরিক বাহিনী না থাকে, তিনদিনের মধ্যে তারা বাংলাদেশকে দখল করে নিবে।”

এই পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণের উদ্দেশে কর্নেল হক বলেন, “আমাদের দেশের সেনাবাহিনী এবং সামরিক বাহিনীর ওপর আস্থা রাখুন। তারা দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্ষম।” তিনি দেশের জনগণকে সতর্ক করে বলেন যে, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং সেনাবাহিনীর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে এবং যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।


লেফটেন্যান্ট তানজিম হ*ত্যায় নতুন মোড়, মৃ*ত্যুর আগে সেদিন যা ঘটেছিল

সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ারের (২৩) হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় ডাকাতি প্রতিরোধ অভিযানের সময় ডাকাত দলের হামলায় তার মৃত্যু হয়। অভিযোগপত্রে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, ডাকাতরা প্রথমে তাকে ছুরিকাঘাত করে, পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার ডান পাশে উপর্যুপরি আঘাত করে তার ফুসফুস ক্ষতবিক্ষত করে। ঘটনাস্থলে তিনি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা থাকলেও ছুরিকাঘাত থেকে রক্ষা পাননি।

চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন মেজর উজ্জ্বল মিয়া। এ সময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার তাদের ধাওয়া করেন এবং নিজের পরিচয় দিয়ে তাদের থামতে বলেন।

একটি বাড়ির উঠানে তারের বেড়ায় আটকানো ডাকাত মোর্শেদ আলমকে ধরে ফেলেন তানজিম। ঠিক তখনই নুরুল আমিন ও নাছির উদ্দিন তাকে পেছন থেকে আক্রমণ করে। তারা তিনজন মিলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে। মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে গলার ডান পাশে ছুরির আঘাত করে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে স্থানীয়রা এবং অভিযানকারী দলের সদস্যরা এগিয়ে এলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

তানজিম ছারোয়ারকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মালুমঘাট খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে এবং পরে রামু ক্যান্টনমেন্টের সিএমএইচে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে ভোর সাড়ে পাঁচটায় মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্তত তিন–চার দিন আগে থেকে অভিযুক্তরা ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল। তদন্তে ডাকাত দলের ১৮ জন সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আবদুল্লাহ আল হারুনুর রশিদ ২৫ সেপ্টেম্বর চকরিয়া থানায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত শেষে ছয়জনকে বাদ দিয়ে নতুন সাতজনকে যুক্ত করে মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। চকরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, আসামিদের কললিস্ট বিশ্লেষণ, এবং গ্রেপ্তার আসামিদের স্বীকারোক্তি থেকে হত্যাকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হয়েছে। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন এবং পলাতক ছয় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি ১২ আসামি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে।