বাংলাদেশে আন্দোলনের মুখে গত আগস্টে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১৯ জানুয়ারি দেশে ফেরার ঘোষণা দিতে পারেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এর আগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে একটি দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এটি সফল হলে, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনার নেতাকর্মীদের সঙ্গে এটি হবে প্রথম সরাসরি যোগাযোগ।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ সিনিয়র নেতা জেলে বা আত্মগোপনে। এই পরিস্থিতিতে দলের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষও বাড়ছে। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে কর্মীরা আত্মগোপনে থাকা সিনিয়র নেতাদের সমালোচনা করছেন।
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, “আওয়ামী লীগ আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে দেশের রাজনীতিতে ফিরে আসবে।” তবে এই প্রত্যাবর্তন কীভাবে হবে, সে বিষয়ে তিনি কোনো বিস্তারিত ধারণা দেননি।
শেখ হাসিনা এর আগে লন্ডন, ফ্রান্স এবং ব্রাসেলসে প্রবাসী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিলেও দলের অভ্যন্তরীণ নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে দলটির নেতারা মনে করছেন, বর্তমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই বৈঠক দলের পুনর্গঠনের প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “দেশের ৪০ ভাগ ভোটার আওয়ামী লীগের। সব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। আমরা দলকে সংগঠিত করার কার্যক্রম শুরু করেছি এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলে নির্বাচনে যাবো।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন মনে করেন, শেখ হাসিনার এমন উদ্যোগ দলকে টিকিয়ে রাখার একটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। তিনি বলেন, “বৈঠকটি যদি হয়, তাহলে দেখার বিষয় হবে শেখ হাসিনা কী বার্তা দেন, দেশে ফেরার ঘোষনা নাকি নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা।”
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার তার পাসপোর্ট বাতিল করলেও ভারত তাকে দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের অনুমতি দিয়েছে। শেখ হাসিনার দেশে ফেরার খবরে তার সমর্থকরা আশাবাদী যে এই উদ্যোগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা নতুন মাত্রা পাবে।