যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিজের সরকারি বাসভবন যমুনায় সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে টিউলিপ এবং তাঁর পরিবার যেসব সম্পত্তি ভোগ করেছেন, সেগুলোর জন্য টিউলিপের ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি আরও দাবি করেন, লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিক যে সম্পত্তিগুলো ব্যবহার করেন, সেগুলোর উৎস নিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি। যদি এসব সম্পত্তি আর্থিক দুর্নীতি বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত প্রমাণিত হয়, তবে সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ব্রিটিশ সরকারের সিটি মিনিস্টার হিসেবে আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করা টিউলিপ সিদ্দিকের নিজেই দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হওয়া একটি বড় বিতর্কের বিষয়। সানডে টাইমসের অনুসন্ধানে জানা যায়, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের একটি বাড়িতে বসবাস করেছেন, যা দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ী একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কিনেছিলেন। অথচ টিউলিপ বরাবরই আর্থিক স্বচ্ছতার পক্ষে কথা বলে এসেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। শেখ হাসিনার শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
সানডে টাইমস আরও জানায়, শেখ হাসিনার সরকার রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক শক্তি চুক্তি করার সময় টিউলিপ মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং সেখান থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ড. ইউনূস বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিক যখন কাজটি করেছেন, হয়তো তখন বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তবে এখন বিষয়টি পরিষ্কার। তাঁর উচিত ক্ষমা চাওয়া এবং পদত্যাগ করা। কিন্তু তিনি তা না করে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “তাঁর পদত্যাগ করা উচিত বলে সরাসরি বলা আমার কাজ নয়। তবে জনগণের স্বার্থে তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে।”