মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, জমি দখল এবং প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এসব কাজের মাধ্যমে মোস্তফা কামাল ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের তুষ্ট করে তার দখলদার সাম্রাজ্য টিকিয়ে রেখেছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, মোস্তফা কামাল মেঘনা নদীর পাড়ে বিশেষ কামরা তৈরি করে সেখানে কাদেরসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জন্য নারী সাপ্লাই দিতেন। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে মেঘনা নদী ও আশপাশের এলাকার জমি দখল করেছেন।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তদন্ত অনুযায়ী, মেঘনা গ্রুপ ২০১০ সাল থেকে মেঘনা নদীর প্রায় ১,৬০০ বিঘা জমি দখল করে সেখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর মধ্যে বেশিরভাগ জমি সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন, যা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে জমি দখলের বিষয়ে প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।
হিউম্যান অ্যান্ড নেচার ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (এইচএনডিসি) এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে চিঠি দিলেও, তারা রহস্যজনকভাবে কোনো উত্তর দেননি।
তদন্তে দেখা যায়, মোস্তফা কামাল প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে, মিথ্যা মামলা এবং অত্যাচারের মাধ্যমে জমি দখল করেছেন। মেঘনা গ্রুপের দখলদারিত্বের কারণে মেঘনা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ হুমকির মুখে পড়েছে।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট মন্ত্রিপরিষদে জমা দেওয়া হলেও, তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক এবং মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
মেঘনা নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে না পারলে দেশের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।