ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা পূর্ব থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম থানা হেফাজত থেকে পালানোর ঘটনায় তোলপাড় চলছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত ২ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর শাহ আলমকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাকে প্রথমে ওসির রুমে এবং পরে থানার হাজতে রাখা হয়। পরদিন সকালে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলাকালে, শাহ আলম বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে একটি খালি রুমে প্রবেশ করেন। এ সময় তার সঙ্গে কোনো পাহারা ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি থানার সবার সামনে দিয়ে নিরিবিলি বের হয়ে যান।
পালানোর ঘটনা দিনভর গোপন রাখার চেষ্টা করা হলেও সন্ধ্যার পর এটি প্রকাশ্যে আসে। থানা হেফাজত থেকে সাবেক ওসির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ বিভাগে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। উত্তরা থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশের অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা ছাড়া শাহ আলম পালাতে পারতেন না।
শাহ আলমের পালানোর ঘটনায় দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও সীমান্ত এলাকাগুলোতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে।
উত্তরা পূর্ব থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সাঈদ জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত এএসআই সাজ্জাদ হোসেন এবং সাবেক ওসি মো. মহিবউল্লাহকে দায়িত্বে অবহেলার জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শাহ আলমের পালানোর ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
শাহ আলমকে পুনরায় গ্রেপ্তার এবং পালানোর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে উত্তরা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারীরা। উত্তরা পূর্ব থানার সামনে বক্তৃতা করে তারা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। আন্দোলনকারীরা প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, তদন্ত দ্রুত শেষ হবে এবং শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছাত্র-জনতার দাবি, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যেন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।