যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের চাচা, তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী ও কন্যার বিরুদ্ধে মাল্টার নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টায় দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া নথি থেকে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে বৃটেনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তারিক আহমেদ সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা ছিলেন, তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। প্রথমবার একা আবেদন করে ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয়বার মেয়ের সঙ্গে যৌথভাবে আবেদন করেন। তবে দুবারই মাল্টা কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, শাহীন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ঢাকায় জমি আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালের নাগরিকত্ব আবেদনপত্রে ঢাকার একটি জমি দখলের বিষয়ে উল্লেখ থাকায় মাল্টার ইমিগ্রেশন কন্সালটেন্সি আবেদনটি বাতিল করে। ২০১৫ সালে নতুন নথি জমা দিলেও তাতে উল্লেখ করা তথ্য যাচাইয়ে সন্তুষ্ট হয়নি কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নাগরিকত্ব আবেদনের অংশ হিসেবে শাহীন একটি ব্যাংকে প্রায় ২৭ লাখ মার্কিন ডলার দেখান। তবে অর্থের উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে ব্যর্থ হন। একই সঙ্গে তাদের আবেদনপত্রে দেওয়া তথ্য এবং মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পূরণে ঘাটতি ছিল।
শাহীন এবং তার মেয়ে বুশরার মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। তবে এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তার বিরুদ্ধে জমি আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বুশরা, যিনি লন্ডনে বসবাস করেন, নাগরিকত্ব আবেদন পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। উত্তর লন্ডনের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বসবাসকারী বুশরা এবং তার মা শাহীন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস নিশ্চিত করেছে, মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য তাদের করা আবেদন দুটি চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়েছে।