ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে ভারত কতটা উন্নতি করেছে, তা বারবার উল্লেখ করেন মোদি। তবে ভারতের এই উত্থানের গল্পে একটি বিশেষ অধ্যায় যুক্ত হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়া। ভারত সম্পর্কে বিশ্বের ধারণা কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা বলতে গিয়ে তাকে যুক্তরাষ্ট্র যে ৯ বছর ভিসা দেয়নি সে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন তিনি। তখন তিনি বলেছিলেন, এমন দিন আসবে যখন ভারতীয় ভিসার জন্য বিশ্ববাসী লাইন দিয়ে দাঁড়াবে।
সম্প্রতি জেরোধার সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিখিল কামাথের সঙ্গে এক পডকাস্টে মোদি এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এই পডকাস্টটি সম্প্রচারিত হয়। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিসা না পাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই দাঙ্গায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই সংখ্যালঘু মুসলিম। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ ওঠে মোদির বিরুদ্ধে। এর জেরে ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র মোদির ভিসা বাতিল করে এবং পরবর্তী ৯ বছর তাকে ভিসা দেওয়া হয়নি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাট দাঙ্গার ঘটনায় মোদির রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দাঙ্গার প্রতি নীরব ভূমিকা ও তা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ মোদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচিত করে তোলে।
তবে ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। মোদি দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে এবং তাকে এ-ওয়ান ভিসা প্রদান করে।
পডকাস্টে মোদি বলেন, “যখন আমি একটি রাজ্যের প্রধান ছিলাম, আমেরিকা আমাকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন আমি বলেছিলাম, একদিন বিশ্ববাসী ভারতীয় ভিসার জন্য লাইন ধরে দাঁড়াবে। সেই কথা ২০০৫ সালে বলেছিলাম। আর আজ ২০২৫ সালে এসে দেখছি, ভারতের সময় এসেছে।”
তবে ভিসা না দেওয়ার সঠিক কারণ নিয়ে মোদি কিছু না বললেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর নেপথ্যে ছিল গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।