ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্তব্য করেছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, এই ইস্যুতে তাদের আইনি দিকগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে একটি কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে। তবে এই বার্তার আইনি ভিত্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে, নির্বাচিত সরকারের কাছে এমন আবেদনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালাগুলো বিশদভাবে খতিয়ে দেখা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, বাংলাদেশের নোট ভার্বালের জবাব দিতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এ প্রসঙ্গে একটি বক্তব্যে জানানো হয়, “বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে এই বার্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।”
নয়াদিল্লির এক কর্মকর্তা বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব বিবেচনা করেই আমরা পদক্ষেপ নেব। শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে।”
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে ভারতের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যে, তারা রাজনৈতিক চাপ সামলাতে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুকে সামনে এনেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংকট, অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি।
ভারতের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, “শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো হলে এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, মানবিক দিক থেকেও একটি গুরুতর সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি যেমন, তাতে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়।”
বিষয়টি নিয়ে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ভারতও সমর্থন দিচ্ছে। এদিকে, বিএনপি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে চলমান সমীকরণ ভারত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
অবশেষে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে দ্রুত কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।