৫ আগস্ট, দেশের ইতিহাসে এক নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী হয় সংসদ ভবন। সেদিন সাবেক স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রায় সাড়ে ১২ ঘণ্টা সংসদ ভবনের বাংকারে আত্মগোপন করেছিলেন। গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল আবেগে ছাত্র-জনতা সংসদ ভবনে প্রবেশ করলে, নিজের নিরাপত্তার জন্য তিনি বাংকারে আশ্রয় নেন।
সূত্র জানায়, শিরীন শারমিনের সঙ্গে আরও ছিলেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ও নাজমা আকতার। লাখো ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা সংসদ ভবন থেকে নেতারা তখন নিরাপত্তার অভাবে আতঙ্কে ছিলেন।
এদিন সংসদ ভবনে থাকা সোনাদানা ও কয়েক কোটি টাকার মধ্যে ৯০ লাখ টাকা পরে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার শুরু হয় দুপুর ২টা ৩১ মিনিটে, যখন এসএসএফ সদস্যরা সাতটি গাড়ি নিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন। অস্ত্র সংগ্রহের পর তারা ভবন ছেড়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরই ছাত্র-জনতার ঢল সংসদ ভবনের দিকে এগিয়ে আসে। নিরাপত্তা শঙ্কায় কর্মকর্তারা দ্রুত স্পিকারসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গোপন কক্ষে সরিয়ে নেন।
প্রথমে বাংকারে আশ্রয় নেওয়া হলেও, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে শিরীন শারমিনসহ অন্যদের ভবনের একটি গোপন কক্ষে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিকেল ৩টা ২৩ মিনিটে ছাত্র-জনতা সংসদ ভবনের মূল অংশে প্রবেশ করে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা কিছুটা কমে এলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। অবশেষে রাত আনুমানিক আড়াইটায় সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস সেনাবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর সেনা সদস্যরা শিরীন শারমিনকে নিরাপত্তা দিয়ে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যান। বাকিরা বিভিন্ন পন্থায় নিরাপদে অবস্থান নেন।
এই ঘটনাটি ইতিহাসের এক বিরল অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা সেদিনের উত্তাল পরিস্থিতির গভীরতা তুলে ধরে।