২০০৭ সালের এক অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সেনাসমর্থিত এক-এগারো সরকার ক্ষমতায় আসে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তারা সুশীল এজেন্ডা বাস্তবায়নের নামে বিরাজনীতিকরণ, মাইনাস টু ফর্মুলার মতো বিতর্কিত উদ্যোগ গ্রহণ করে। ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে তারা জনগণের আস্থা হারায়।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের চাপ বাড়ছে। বিএনপি সহ বড় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে এবং পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকার যদি নিরপেক্ষ থেকে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ না করে, তবে তাদেরও ১/১১ সরকারের মতো বিতর্কিতভাবে বিদায় নিতে হতে পারে।
সরকার ঘনিষ্ঠ এক রাজনৈতিক নেতা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনে। প্রত্যাশা ছিল তারা নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন আয়োজন করবে। কিন্তু তারা বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করছে। বিতর্কিত উপদেষ্টা নিয়োগের মাধ্যমে গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন না করে তারা বরং দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে জনগণের আস্থা কমছে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রেও এক-এগারোর মতো উন্নয়নবিরোধী কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিভিন্ন শিল্প পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং হয়রানিমূলক তদন্তের ফলে ব্যবসায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনীতি বড় সংকটে পড়বে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, একমাত্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের নির্বাচিত সরকারই দেশকে এই সংকট থেকে মুক্তি দিতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত জনগণের আস্থা ফেরাতে অবিলম্বে পক্ষপাতহীন নির্বাচনের আয়োজন নিশ্চিত করা। অন্যথায়, তারা ১/১১ সরকারের মতো একই পরিণতির সম্মুখীন হতে পারে।