হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিলিগুড়ি করিডর, যা চিকেন নেক নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে সেভেন সিস্টার্স বলে পরিচিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
চিকেন নেক করিডোর ভারতের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২২ কিলোমিটার প্রস্থের এই করিডোরটি ভারতের মূল ভূখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সংযোগের একমাত্র মাধ্যম। এর পূর্বে নেপাল, পশ্চিমে বাংলাদেশ এবং কাছাকাছি ভুটান ও চীনের সীমান্ত অবস্থিত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশিদের রাজনৈতিকভাবে চিকেন নেক নিয়ে কোনো এজেন্ডা নেই। তবে ভারতের উচিত এটি নিয়ে অতি সতর্ক না হয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত রাখা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু না করলে উভয় দেশের জন্যই এটি ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।
চিকেন নেক করিডোর অর্থনৈতিক এবং ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের জন্য এই করিডোরে রয়েছে নেপালের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ, আর ভারতের জন্য এটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ।
বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চিকেন নেক নিয়ে বিশেষ কোনো উদ্বেগ দেখা যায়নি। তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর বিষয়টি নতুন করে ভাবাচ্ছে ভারতকে। সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের পেছনে পরোক্ষভাবে চিকেন নেক ইস্যু কাজ করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা আরও বলেন, ভূমি বিনিময়ের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশিদের জন্য চিকেন নেক নিয়ে কোনো বিশেষ রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। ভারতের উচিত, বাংলাদেশ নিয়ে এককেন্দ্রিক মনোভাব থেকে বের হয়ে এসে সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেওয়া।