বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মগুরু চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে এবার সরব হয়েছেন ভারতীয় ধর্মগুরুরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধগুরু এবং শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও ধর্মীয় অবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ।
সাধগুরু একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক জাতি কীভাবে ধর্মতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী হওয়ার জন্য ভেঙে পড়ছে। এটা খুবই লজ্জাজনক। মুক্ত গণতন্ত্রের মূল্য অনুধাবন করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। ধর্মের ভিত্তিতে নিপীড়ন বা জনসংখ্যার দুর্বল শ্রেণির ওপর হামলা কোনও গণতান্ত্রিক জাতির পক্ষে কাম্য নয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক নীতি থেকে দূরে সরে গিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব হওয়া উচিত একটি গণতান্ত্রিক জাতি গঠন করা। যেখানে সকল নাগরিকের প্রয়োজনীয় অধিকার এবং তাদের চাহিদা ও বিশ্বাস অনুযায়ী জীবন যাপন করার ক্ষমতা থাকবে।’ (আরও পড়ুন: বেনজির আক্রমণ শানিয়েছিলেন সঞ্জয় রাউত, প্রাক্তন CJI চন্দ্রচূড়ের জবাব – ‘সরি…’)
এদিকে, একটি ভিডিও বার্তায় শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন ধর্মীয় নেতার কর্তব্য। আজ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, এবং ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিকে কী ধরনের ন্যায়বিচার দেওয়া হচ্ছে? তিনি বন্দুক ব্যবহার করেননি, কাউকে আঘাত করেননি। ভীতু ও অসহায় মানুষকে তিনি সাহস যোগাচ্ছেন। এটা যে কোনও ধর্মীয় নেতার কর্তব্য। সে শুধু তার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছেন, যা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার।’ এই আবহে ইউনুস সরকারের কাছে রবি শঙ্কর দাবি জানান যাতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে, ভারত সরকারও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর বারবার চরমপন্থীদের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। অথচ অপরাধীরা শাস্তি পাচ্ছে না। এর বিপরীতে, একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবি উত্থাপনকারী একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
বিদেশ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং জামিন অস্বীকৃতির বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন, যেন এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হয়।”
এই ঘটনায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের উপর নতুন আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ আরও প্রকট হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।