জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী কোনো ভুল করে থাকলে এবং তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলে তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে এবং তা নির্ভুলভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইব।” তবে তিনি অভিযোগ করেন, ব্রিটেনে বসে চৌধুরী মাইনুদ্দিনের বিষয়ে দেওয়া রায় ও বাংলাদেশের ওয়ার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের রায়কে এখানকার বিচারপতিরা ‘জেনোসাইড অব জাস্টিস’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “১৫ বছর ধরে আমাদের দলকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের অফিস ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি, র্যালি করতে দেওয়া হয়নি। ফলে আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমেও জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারিনি।”
জাতির অগ্রগতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “জাতিগত বিভেদ ও দুর্নীতি আমাদের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। দুর্নীতি একটি জাতীয় লজ্জার বিষয়। যারা সমাজ পরিচালনা করবেন, তারা সৎ না হলে সমাজ কখনোই পরিচ্ছন্ন হতে পারে না।”
ডা. শফিকুর উন্নয়ন প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়েও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পে যে ব্যয় দেখানো হয়, তা অনেক বেশি। অন্যান্য দেশে একই প্রকল্প এক-তৃতীয়াংশ খরচে সম্পন্ন হয়। সময়মতো প্রকল্প শেষ হয় না এবং বারবার সময় বাড়িয়ে ব্যয়ও বাড়ানো হয়। এভাবে দেশটাকে নিঃস্ব করা হয়েছে।”
২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের “জাতীয় বীর” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থানে দেশের সব শ্রেণির মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। প্রবাসীরাও তাদের সাধ্য অনুযায়ী অবদান রেখেছেন।”
তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশকে শুধু মনিটারি রেমিটেন্স নয়, ইন্টেলিজেন্স রেমিটেন্স পাঠানোর জন্যও আমি অনুরোধ করছি। এটি দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়ক হবে।”
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবুবকর মোল্লা এবং যুক্তরাজ্যের বাংলা মিডিয়ার ৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।