১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেনি জামায়াতে ইসলামী, তবে ভারতের সহযোগিতায় স্বাধীনতা অর্জনের পর স্বাধীনতার সুফল বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা ছিল দলটির। এমন দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। চ্যানেল ২৪-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বর্তমান সরকারের কাছে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অভিযোগকেও মিথ্যা প্রচারণা বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে, আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য দলটিকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, সেটি জনগণকেই নির্ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের রাজনীতিতে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি এবং দল নিষিদ্ধ ঘোষণা—এসবের মধ্য দিয়েই দলের নেতা-কর্মীদের টিকে থাকতে হয়েছে। তবে গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জামায়াত কিছুটা স্বস্তির সময় পার করছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই নিষিদ্ধের রাজনীতি সামনে আসে। এটি আমাদের সমর্থনের বিষয় নয়, বরং জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিষয়।” বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে সাম্প্রতিক সময়ে যে আলোচনা চলছে, সেটিকেও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা স্বাধীনতার বিরোধী ছিলাম না। তবে ভারতের সহযোগিতায় দেশ স্বাধীন হলে স্বাধীনতার সুফল আদৌ মিলবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা ছিল। যদিও এটা ঠিক যে, জামায়াত তখন এক পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। তবে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণে সারা জাতি ফুসে ওঠে এবং মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। সেই যুদ্ধ সফল হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশকে আমরা মেনে নিয়েছি এবং ভালোবেসেছি।”
জামায়াতের স্বাধীনতা-পরবর্তী ভূমিকার মূল্যায়ন জনগণের ওপর ছেড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তখন আমাদের চিন্তা এবং সিদ্ধান্ত পরাজিত হয়েছিল। জনগণই বিচার করবে আমাদের সে ভূমিকা কতটা সঠিক ছিল।”
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জামায়াত বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে—এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “যৌক্তিক সংস্কারের জন্য সময় প্রয়োজন। কিছু সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকার করবে, কিছু করবে নির্বাচিত সরকার। তবে আমরা বারবার বলেছি, তাড়াহুড়ো না করে এটি সম্পন্ন করতে হবে।”