ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত ঢাকা সিটি কলেজে চলমান সংকটের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ১৭ দিন ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, কলেজের শীর্ষ প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে, যা তাদের শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
গত ২৮ অক্টোবর, শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ, বহিষ্কৃত শিক্ষকদের পুনর্বহাল, এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন। পরে কলেজ প্রশাসন ‘অনিবার্য কারণ’ উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে।
তারা জানান, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ নিয়ামুল হক ও উপাধ্যক্ষ মো. মোখলেছুর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই একাধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করেছেন। এছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের মতো অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে ১৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার পর আন্দোলনের মুখে মাত্র ৪ জনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১২ জন এখনো বেতনহীন অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
অধ্যক্ষের নিয়োগ বৈধ কি না, তা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। ২৭ অক্টোবর, বিচারপতি ফারা মাহবুব ও দেবাশিষ রায়ের বেঞ্চ থেকে রুল জারি করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার লড়াইয়ে তাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। তারা দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য না করলেও শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন পুনরুদ্ধারে প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি এখন আরও জোরালো হচ্ছে।