ল রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) সংবিধানের একটি খসড়া প্রস্তাবনায় দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ ৩০০ আসনে প্রচলিত ভোটের মাধ্যমে গঠিত হবে। এতে কোনো সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে না। নারীদের সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে আসতে হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে।
খসড়ায় জাতীয় পরিষদ নামে একটি উচ্চকক্ষের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যেখানে সদস্যসংখ্যা হবে ২০০। এই পরিষদের সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে নির্বাচিত হবেন। এছাড়া, ২৫টি সংরক্ষিত নারী আসন এবং রাষ্ট্রপতির মনোনীত ১০টি আসন রাখা হবে, যা উপজাতি, অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্য নির্ধারিত থাকবে।
প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটের অর্ধেক প্রয়োগ না হলে নির্বাচন বাতিল হবে এবং পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতীয় পরিষদের দায়িত্ব:
জাতীয় পরিষদকে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী ও আইনপ্রণয়ন পরিষদ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এটি অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্য রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকবে। বাজেট প্রণয়নের আগেই জাতীয় পরিষদে প্রাক-বাজেট আলোচনা হবে।
জাতীয় সংসদের গঠন:
৩০০ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে। এ সংসদ আইন প্রণয়ন করবে, তবে জাতীয় পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে। সদস্যরা রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন।
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় প্রস্তাব:
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দণ্ড হতে পারে এমন অপরাধে অভিযুক্ত করা যাবে না। গুরুতর অপরাধ সন্দেহে আটক করতে হলে উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করতে হবে এবং আদালতে যথাযথ প্রতিবেদন পেশ করতে হবে।
সুপ্রিমকোর্ট মিলনায়তনে আয়োজিত “কেমন সংবিধান চাই” শীর্ষক আলোচনায় খসড়া প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন, এবং উপস্থিত ছিলেন ড. কামাল হোসেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানসহ বিশিষ্টজনেরা।
এই প্রস্তাবনা সংবিধান সংস্কারের পথে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।