Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জেলে থেকে শত কোটি টাকার মালিক আলমগীর

জেলে থেকে শত কোটি টাকার মালিক আলমগীর

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি এবং সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আলমগীর হোসেন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী শুধু সাধারণ মানুষই নয়, নিজের দলীয় নেতাকর্মীদেরও নির্যাতন করেছেন। জমি দখল, ঘাট দখল, চাঁদাবাজি, হামলা, এবং মামলাই ছিল তার প্রতিদিনের কাজ। প্রতিবাদ করলে নেমে আসতো নির্মম নির্যাতন। তার আতঙ্কে রয়েছে চররমনী মোহন, মজুচৌধুরীহাটসহ আশপাশের একাধিক এলাকা। আলমগীরের বিরুদ্ধে সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এছাড়া, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি চালানোর মাধ্যমে চার শিক্ষার্থীকে হত্যা এবং তিনশ’ এর বেশি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তার সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এরপর থেকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আলমগীর হোসেন আত্মগোপনে চলে যান।

আলমগীরের নামে রয়েছে লক্ষ্মীপুর শহরসহ বিভিন্ন স্থানে বহুতল বাড়ি এবং কয়েক একর জমি। চর মেঘাতে সরকারি খাস জমি দখল করে ৫শ’ এর বেশি মহিষ পালছেন। এছাড়া মজুচৌধুরীহাটে রয়েছে তার একটি বালু মহল। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মজুচৌধুরীহাটের বাসিন্দাদের মতে, আলমগীর হোসেন জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি ছিলেন এবং চররমনী মোহন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তিনি সরকারি খাস জমি দখল, ঘাট দখল, চাঁদাবাজি ও বালুমহল পরিচালনা করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। তার গোহাটা সড়কে নির্মিত ৫ তলা বাড়ি, কয়েক একর জমি এবং একাধিক প্লট রয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী বেষ্টিত এই এলাকায় কৃষি কাজ এবং মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন স্থানীয়রা। কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আলমগীর হোসেন তাদের শোষণ করেছেন। তার নেতৃত্বে একটি বিশাল লাঠিয়াল বাহিনী রয়েছে, যারা জমি দখল, ঘাট দখল, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে।

আলমগীর হোসেনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ভোলার সাবাসপুর থেকে, কিন্তু স্বাধীনতার পর তিনি লক্ষ্মীপুরের চররমনী মোহন এলাকায় এসে রাজনীতি শুরু করেন। এখানে তার পরিবারের সিন্ডিকেট এখন পর্যন্ত সরকারি জমি দখল, বেড়িবাঁধ দখল, মাছ ঘাট দখল, মাদক ব্যবসা, বালু মহল পরিচালনা এবং চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।

মজুচৌধুরীহাটের বাসিন্দা আবদুল আজিজ এবং আনোয়ার হোসেন বলেন, আলমগীর এবং তার বাহিনীর অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। তাদের কাছে অভিযোগ আসে যে, যারা তার নির্দেশনা মানতো না, তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং নির্যাতন করা হতো। এছাড়া, তার আত্মীয়স্বজনরা জমি দখল, ঘাট দখল এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছিল।

আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোন্নাফ জানান, তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, “আইনের কাছে অপরাধী যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন, তার বিচার হবে।”

About Nasimul Islam

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *