হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। অভিযোগ উঠেছে, গত ১০ অক্টোবর তিনি ঘরে বসে পাসপোর্টের জন্য আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ জমা দিয়েছেন।
ই-পাসপোর্টের নিয়ম অনুযায়ী, অসুস্থ বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরাই কেবল ঘরে বসে এই প্রক্রিয়াটি করতে পারেন। কিন্তু শারীরিকভাবে সুস্থ কেউ এ সুবিধা পেতে হলে তাকে নির্ধারিত পাসপোর্ট অফিসে হাজির হতে হয়। দেশ রূপান্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিরীন শারমিন এই প্রক্রিয়ার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে ঘরে বসেই আঙুলের ছাপ দিয়েছেন।
শিরীন শারমিনের বিরুদ্ধে রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মুসলিম উদ্দিন নামে একজন নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা রয়েছে। মামলার এড়াতে তিনি গত ৩ অক্টোবর স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইনের সঙ্গে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। তবে তারা অফিসে না গিয়েই ঘরে বসে আঙুলের ছাপ ও আইরিশ জমা দেন বলে জানা যায়।
ঢাকা বিভাগের পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বলেছেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে, তবে প্রক্রিয়া অনুযায়ী তা মেনে চলতে হবে।”
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকার জানান, ঘরে বসে আঙুলের ছাপ দেওয়ার অনুমতি শুধুমাত্র গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রেই দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “শিরীন শারমিন হত্যা মামলার আসামি হলেও পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার তার আছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সন্দেহজনক এবং তিনি বিদেশে চলে যেতে পারেন।”
এদিকে, রংপুর মহানগর পুলিশ কোতোয়ালি থানায় এ মামলার তদন্ত করছে এবং শিরীন শারমিনের অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে।