রিজার্ভ নিয়ে বিশাল বড় সুসংবাদ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, রিজার্ভ কমে যাওয়া বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলারে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এখন ২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) BPM-6 পদ্ধতি অনুসারে, এটি ২ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি।”

প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে রিজার্ভ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। প্রবাসীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন, যা রিজার্ভ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ।

তিনি আরও বলেন, “সঙ্কট কমতে শুরু করায় ব্যাংকগুলো এখন নিজেদের ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছে। বর্তমানে ডলারের দাম ১১৮-১২০ টাকার মধ্যে। ব্যাংকিং চ্যানেল এবং কার্ব মার্কেটে ডলারের দামের মধ্যে পার্থক্য এখন ১ শতাংশেরও কম।”

“সক্রিয় আন্তঃব্যাংক লেনদেনের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার এখন স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে,” হুসনে আরা শিখা বলেন, ডলারের বিনিময় হার বাজার ভিত্তিক হয়েছে।


কোনো দলের সমর্থক ছিলাম বলে কি দেশটা আমার নয়?: অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি

সরকার পতনের পর প্রথমবারের মতো শিল্পকলা একাডেমিতে যাওয়ার সময় অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি কঠোর অপমানের সম্মুখীন হন। ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে শিল্পকলার নতুন মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর সহকর্মীদের বাধার মুখে তাকে একাডেমি থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। এই ঘটনার পর ফেসবুক লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন জ্যোতি এবং দর্শকদের সামনে তার ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করেন।

ফেসবুক লাইভে জ্যোতি বলেন, “আমি কি এই অপমানের যোগ্য ছিলাম? শুধু কোনো দলের সমর্থক হওয়ার কারণে কি দেশটা আমার নয়? আমার তো এখানেই থাকার কথা, তাহলে আমি কোথায় যাব?” তিনি আরও বলেন, অনেকেই তার খোঁজ নিয়ে চিন্তিত হয়েছেন। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান যে, তিনি শারীরিকভাবে ঠিক আছেন, কিন্তু মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। “আমি জানি না, কতদিন লাগবে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে,” বলে তিনি তার কষ্ট প্রকাশ করেন।

শিল্পকলা একাডেমিতে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জ্যোতি বলেন, তিনি দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তার মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। তাই তিনি মনে করেছিলেন, নতুন মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করে অফিসে যোগ দেয়া উচিত। যদিও সচিব তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন একাডেমিতে না যাওয়ার জন্য, তবুও জ্যোতি সেখানে যান, কারণ তিনি মনে করেছিলেন তার এখনও চাকরি আছে।

তিনি আরও জানান, সহকর্মীদের আচরণে হতবাক হয়ে তিনি বুঝতে পারেননি কেন তাকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হলো। কিছু সহকর্মী তাকে দ্রুত অফিস ছাড়তে বলেন এবং তাকে ঘিরে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করেন। “আমার সহকর্মীরা আমাকে চিনতে চাইলো না, আমি বুঝতে পারলাম না, তারা এতদিন কোথায় ছিল?” – বলে তিনি আশ্চর্য হন।

অভিনেত্রী আরও জানান, অফিসে থাকা কিছু ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নেওয়ার সময়ও তাকে সহকর্মীদের সামনে তা প্রদর্শন করে নিতে হয়। “আমার মায়ের ছবি আর কসমেটিকস ছিল, সেগুলো নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও বাধার মুখে পড়ি। আমার প্রশ্ন ছিল, আমার চাকরি এখনো শেষ হয়নি, তাহলে কেন আমাকে এভাবে বের করে দেওয়া হলো?”

শিল্পকলার সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর আইরিন পারভীন লোপা গণমাধ্যমকে জানান, জ্যোতি অফিসে আসার পর সহকর্মীরা জড়ো হন এবং তাকে চলে যেতে বলেন। “তিনি ‘আলো আসবেই’ নামের একটি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, এমন একজনকে আমরা সহকর্মী হিসেবে চাই না।” লোপা আরও বলেন, “জ্যোতি এখনো মনে করছেন তিনি সরকারের একজন কর্মকর্তা, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি যে সরকারের অধীনে ছিলেন, সেই সরকার এখন নেই। তাই আমরা তাকে সসম্মানে চলে যেতে বলেছি।”

জ্যোতি এই অপমান ও হতাশার মধ্যে থেকে একটাই প্রশ্ন রেখে যান: “কোনো দলের সমর্থক ছিলাম বলে কি এই দেশটা আমার নয়?”