রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ইমরান হোসেন হত্যার ঘটনায় সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৮৩৩ নম্বর রুম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাত্রাবাড়ী থানার একটি মামলায় থানা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার সূত্রপাত হয় গত ১ সেপ্টেম্বর, যখন ইমরানের মা কোহিনূর আক্তার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর-৬। ইমরান হোসেনের হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনসহ মোট ২৯৭ জনকে। এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, মোখলেছুর রহমান বাদল, এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু।
তাছাড়া, আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ একাধিক উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
মামলার বাদী কোহিনূর আক্তার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার ছেলে ইমরান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতেন। ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে আন্দোলন চলাকালে ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। এজাহারে বলা হয়, আসামিরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালায়। এতে ইমরান গুরুতর আহত হন এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
প্রসঙ্গত, নুরুল ইসলাম সুজন ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। যদিও প্রথমবারে তিনি পরাজিত হন, তবে ২০০৮ সালে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে আরও দুইবার নির্বাচিত হন এবং সর্বশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। তার রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি কঠিন মুহূর্তের মুখোমুখি হয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের দিন তার স্ত্রী নিলুফার ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন।
এখন, এই গ্রেপ্তার এবং মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জল্পনা চলছে।