অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল দ্য কনভারসেশন অনুসারে, ভারতে পালিয়ে আসা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন চারটি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিওয়ায় ক্রমাগত কূটনৈতিক চাপে রয়েছে মোদি সরকার। তাই শেষ গন্তব্য হিসেবে ভারতে থাকতে চান না হাসিনা।
ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এখন চারটি দেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছেন যেখানে তার ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যরা থাকেন। প্রথমে তিনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করলেও দুই দেশ তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। কিন্তু হাসিনা হাল ছাড়েননি। ওই দুই দেশ ছাড়াও তিনি ফিনল্যান্ড, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনাকে খুব অল্প সময়ের নোটিশে বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। সেখানে একটি ‘সেফ হাউজে’ রয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ তার পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়ায় ভারত হাসিনাকে নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় আছে। ফলে হাসিনা এখন বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশের সাথে আশ্রয়লাভের জন্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভারত ছেড়ে কোথায় যাবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী? ভারত সরকার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব। শেখ হাসিনাকে নিয়ে তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলছে না দেশটি। তবে পালিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, তার মা আপাতত কোথাও যাচ্ছেন না। কোথাও যাওয়ার আবেদন করেননি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে দেশে ফিরবেন বলেও জানান জয়।
প্রশ্ন উঠেছে, ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সমীকরণ কী হবে? প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর মর্যাদা দিলে হাসিনাকে ফেরানো কঠিন হবে। কারণ কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত দিতে ভারতের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। কিন্তু ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে নতুন সম্পর্ক জোরদার করতে হাসিনা ইস্যু ভারতের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি এবং যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি মন্ত্রী। শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কাজের জন্য দিল্লিতে থাকেন।