দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকায় সরকারি-বেসরকারি স্পীড বোট পাঠানোসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয় ছাড়বেন না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৬টায় মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যা কবলিত এলাকায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না দেয়ায় পাঁচ দফা দাবিতে ভোর ৪টায় মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এক ঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে চেয়ারম্যান একজন প্রতিনিধি পাঠান। এ সময় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এসে নৌ-পরিবহন কন্ট্রোল অফিসের কার্যক্রম বন্ধ পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং জবাবদিহি নিশ্চিতের কথা জানান। পরে শিক্ষার্থীরা সাড়ে ৬টার দিকে অবস্থান ছেড়ে দেন।
কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরকারি-বেসরকারি সব স্পীড বোট পাঠাতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেকে বলুন যে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আছে। এক ঘন্টার মধ্যে কন্ট্রোল রুম চালু করুন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংকটকালে যারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে যেন আর শিক্ষার্থীদের ঘেরাও করা না লাগে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ুন। সকল বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদেরকে যেন আর নির্দেশনা দেয়া না লাগে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সকল শ্রেণির মানুষকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
নাহিদ বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ কোনো আলোচনা ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কোনো রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তা রুখে দেবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কার্যালয়ে অবস্থান করবেন বলেও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ। দাবিসমূহ:
১. সরকারি-বেসরকারি যত স্পিড বোট আছে এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত স্থানে পাঠাতে হবে।
২. ছোট ছোট লঞ্চ বিভিন্ন পোর্টে যেগুলো আছে খুব দ্রুতই বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠাতে হবে।
৩.বন্যায় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সব যানবাহনকে কর্তৃপক্ষ থেকে জরুরিভাবে জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে।
৪. সব বেসরকারি ট্রলার ও স্পিড বোটকে এই ক্রান্তিলগ্নে ফ্রি করে দিতে হবে।
৫. যতদিন এই দূর্যোগ অবস্থা বিরাজমান থাকবে ততদিন ২৪ ঘণ্টাই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রতিটি এলাকায় প্রতিনিধি পাঠাতে হবে।