২০০৮ সালে জুনাইদ আহমেদ পলক নাটোরের সিংড়া উপজেলা থেকে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা ধার করে নির্বাচন পরিচালনা করা হয়। নির্বাচনী হলফনামায় তিনি লিখেছেন, তার ১৫ শতক কৃষি জমি, ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র রয়েছে ৬০ হাজার টাকার।
এরপর তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হয়ে আলাদিনের প্রদীপ পান পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ছিলেন। তাই জয়ের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পেল পলক। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হয়ে ওঠেন স্বেচ্ছাচারি।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপন করেন। বুধবার রাতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনের সময় তাকে আটক করা হয়।
বুধবার রাতে ডিএমপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাঁচ ভিআইপি আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিবি)। রাজধানীর নিউমার্কেট ও পল্টন থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পলককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলাগুলো এখনো থানা পুলিশের তদন্তাধীন রয়েছে। তবে তাদের ভিআইপি আসামি হিসেবে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, জুনায়েদ আহমেদ পলক গ্রেপ্তারের পর থেকে বেশিরভাগ সময়ই কান্নাকাটি করছেন। তিনি ইন্টারনেট বন্ধের দায়ও অস্বীকার করেছেন। তার মতে, প্রতিমন্ত্রী হলেও ইন্টারনেট বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত তার
একার ছিল না।
জিজ্ঞাসাবাদে পলক জানান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ও এনটিএমসির মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এছাড়া ইন্টারনেট বন্ধের পক্ষে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জিজ্ঞাসাবাদকারী সূত্রে জানা গেছে, ভিআইপি আসামিদের মধ্যে জুনায়েদ আহমেদ পলক সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছেন। এত দ্রুত সরকারের পতন হতে পারে তা তিনি ভাবতে পারেননি। যদিও একদিন আগে স্ত্রী-সন্তানকে বিদেশে পাঠানোর কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। পলকের মতে, তিনি চাইলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারতেন। তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বেঈমানি করা হবে’ বলে তিনি যাননি।