শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর অনেক মন্ত্রী-এমপি ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। কেউ কেউ সুযোগ বুঝে দেশ ছেড়েছেন। তবে আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতা হত্যার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন অনেকে। এদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও এনটিএমসির সাবেক ডিজি বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন। রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা দেশের বড় বড় দুর্নীতির জন্য শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনদের দায়ী করছেন। অনেক কর্তাব্যক্তি আবার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের কথা বলে নিজেরাই বাগিয়ে নিতেন বড় বড় কাজ।
সূত্র জানায়, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি সালমান এফ রহমান।তবে, মোহাম্মদ আলী আরাফাত নির্বাচনের বিষয়ে যাবতীয় নীলনকশা করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। কেবল নির্বাচনের জন্যই তারা কয়েকজন শত কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সালমান আরও বলেন, জ্বালানি খাতের সবকিছুই সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ডিজাইন করতেন। একই সঙ্গে তিনি বাপেক্সকে দেশের কল্যাণের চেয়ে নিজের কল্যাণে ব্যবহার করেছেন।
এদিকে জুনায়েদ আহমেদ পলক জানান, সরকারের নির্দেশেই তিনি এ অপরাধে জড়িত ছিলেন। তিনি ইন্টারনেট বন্ধের দায়ও অস্বীকার করেছেন। তার মতে, ইন্টারনেট বন্ধ করা তার একার সিদ্ধান্ত তার ছিল না। সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তিনি ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া ইন্টারনেট বন্ধের পক্ষে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর বাইরে এনটিএমসির সাবেক ডিজি জিয়াউল আহসানও তার সব অপরাধের জন্য শেখ হাসিনা ও তার সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিককে দায়ী করেন। তিনি বলেন, তাদের নির্দেশেই তিনি সবকিছু করেছেন। এনটিএমসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকলেও তারিকের নির্দেশে এটি পরিচালিত হয়।
জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম ও অনেকের ফোন ট্যাপিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আসামিদের সব তথ্য এখন আমলে নেওয়া হচ্ছে না। এগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। একই সঙ্গে গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে পূর্বের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।