সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দুই সাবেক মন্ত্রীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বাদী হয়ে এ মামলা করেন রাজধানীর এক ব্যবসায়ী।
দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলার শুনানি হবে বলে জানা গেছে। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর এই প্রথম শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হলো। মামলার বাদী হয়েছেন, আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এস এম আমীর হামজা শাতিল।
তিনি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এ মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন।
আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত পুলিশ কর্মকর্তা বা পুলিশের সদস্য ও তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আমির হামজা শাতিল গণমাধ্যমকে বলেন,‘বিবেকের তাড়নায় আমি এ মামলা করেছি। দুপুরে মধ্যে শুনানি হবে।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও জনতা সমাবেশ করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র নিহত ও আহত হয়। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় ৪০ ফুট এলাকায় শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিল শিক্ষার্থীরা। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। নিহত সায়েদকে তার গ্রামের বাড়িতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এ জন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এ মামলা করেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে আইজিপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধস্তন পুলিশ সদস্যদের নির্দেশে মিছিলে গুলি চালায়। অভিযুক্তরা পারস্পরিক ষড়যন্ত্রে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তাই এর বিচার হওয়া দরকার।
বাদীর আইনজীবী মো. মামুন মিয়া জানান, এ দিকে মামলাটি থানায় এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।